পরিমাপের ত্রুটি কাকে বলে? পরিমাপের ত্রুটির প্রকারভেদ

পরিমাপের ত্রুটি কাকে বলে? পরিমাপের ত্রুটির প্রকারভেদ

যে কোনো পরিমাপ যন্ত্রের সাহায্যে পরিমাপ করা হোক না কেন সব পরিমাপের ফলাফলে কিছু অনিশ্চয়তা থাকে। এ অনিশ্চয়তাকে পরিমাপের ত্রুটি বলে।

পরিমাপের ত্রুটির প্রকারভেদ
পরিমাপের ত্রুটির বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।
এদের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা নিচে তুলে ধরা হলো।

পদার্থের ধর্ম কত প্রকার ও কি কি?

দৈব ত্রুটি: কোনো একটি ধ্রুব রাশি কয়েকবার পরিমাপ করলে যে ত্রুটির কারণে পরিমাপকৃত মানে অসামঞ্জস্য দেখা যায় তাই দৈব ত্রুটি। এই ত্রুটি সম্পর্কে আগে থেকে অনুমান করা যায় না।

ব্যাকল্যাশ ত্রুটি: যেসব যন্ত্র সাধারণত স্ক্রু, নাট ইত্যাদি নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি সেসব যন্ত্রেই কম বেশি এ ধরনের ত্রুটি দেখা দেয়।
নতুন যন্ত্রে এ ত্রুটি প্রায় থাকেই না।
কিন্তু ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে স্ক্রু ক্ষয় হয়ে আলগা হয়ে পড়ে ফলে স্ক্রুকে উভয় দিকে একই পরিমাণ ঘূর্ণনে সরণ সমান হয় না। একে ব্যাকল্যাশ ত্রুটি বা পিছট ত্রুটি বলে। পাঠ নেওয়ার সময় স্ক্রুকে একই দিকে ঘুরিয়ে এ ত্রুটি পরিহার করা যায়।

এলোমেলো ত্রুটি: যখন কোনো রাশি একাধিকবার পরিমাপ করি তখন প্রাপ্ত মান কখনো প্রকৃত মান থেকে কম আবার কখনো বেশি হতে পারে। এমনকি এ কম-বেশির পরিমাণও বিভিন্ন হতে পারে। পরিমাপের এ ধরনের ত্রুটিকে এলোমেলো ত্রুটি বলে।

নিয়মিত ত্রুটি: পরীক্ষাকালে কোনো কোনো ত্রুটির ফলে পরীক্ষাধীন রাশির পরীক্ষালব্ধ মান সর্বদাই এবং নিয়মিতভাবে রাশিটির প্রকৃত মান অপেক্ষা কম বা বেশি হতে পারে। এ ত্রুটিকে নিয়মিত ত্রুটি বলে।

অনিয়মিত ত্রুটি: ত্রুটির বিভিন্ন বিষয়ে উপযুক্ত সাবধানতা অবলম্বন করা সত্ত্বেও কোনো একটি রাশির পাঠ বারবার ভিন্ন হতে দেখা যায়। এ ধরনের ত্রুটিকে অনিয়মিত ত্রুটি বলে।

Table of Contents

জানারউপায়

পুনরাবৃত্তিক ত্রুটি: কোনো রাশি পরিমাপের সময় যদি ত্রুটি সর্বদা একদিকে হয় অর্থাৎ ধনাত্মক হলে শুধু ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হলে শুধু ঋণাত্মক হয় তবে এ ধরনের ত্রুটিকে পুনরাবৃত্তিক ত্রুটি বলে।

যান্ত্রিক ত্রুটি: ভার্নিয়ার বা বৃত্তাকার স্কেলের শূন্য দাগ যদি প্রধান বা রৈখিক স্কেলের শূন্য দাগের সাথে মিলে না যায়, তাহলে যন্ত্রে যে ত্রুটি দেখা যায় তাকে যান্ত্রিক ত্রুটি বলে।

লেভেল ক্রুটি: নিক্তি, বিক্ষেপ চৌম্বক মান যন্ত্র ইত্যাদি অনভুমিক না থাকলে পাঠ ভুল হয়। এ ধরনের ত্রুটিকে লেভেল ত্রুটি বলে। এসব যন্ত্রের নিচে লেভেলিং স্ক্রু থাকে। স্লিরিট লেভেল বা ওলন সুতা ব্যবহার করে লেভেলিং স্ক্রুর সাহায্যে যন্ত্রকে লেভেল করা হয়।

শূন্য ত্রুটি: যেসব যন্ত্রে ভার্নিয়ার স্কেল বা বৃত্তাকার স্কেল যুক্ত থাকে, যেমন– স্লাইড ক্যালিপার্স, স্ক্রু-গজ। এ সকল যন্ত্রের চোয়াল বা স্ক্রুর প্রান্ত পরস্পরের সাথে মিলিত থাকা অবস্থায় ভার্নিয়ার বা বৃত্তাকার স্কেলের শূন্য দাগ প্রধান স্কেলের শূন্য দাগের সাথে মিলে যাওয়ার কথা। যদি না মিলে, তবে এ ধরনের ত্রুটিকে শূন্য ত্রুটি বলে।

চূড়ান্ত ত্রুটি: চূড়ান্ত ত্রুটি হলো প্রকৃত মানের তুলনায় পরিমাপ করা মাপের পার্থক্যটুকু। অর্থাৎ, কোনো রাশি পরিমাপ করার সময় সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ত্রুটিকে চূড়ান্ত ত্রুটি বলে।

পরম ত্রুটি: কোনো একটি রাশির প্রকৃত মান ও পরিমাপকৃত মানের পার্থক্যকে পরম ত্রুটি বলে।

এখানে যা শিখলাম–
পরিমাপের ত্রুটি কাকে বলে?; পরিমাপের ত্রুটি কত প্রকার ও কি কি?; দৈব ত্রুটি কাকে বলে?; ব্যাকল্যাশ ত্রুটি কি?; এলোমেলো ত্রুটি কাকে বলে?; নিয়মিত ত্রুটি কাকে বলে?; অনিয়মিত ত্রুটি কাকে বলে?; পুনরাবৃত্তিক ত্রুটি কি?; যান্ত্রিক ত্রুটি কাকে বলে?; লেভেল ক্রুটি কাকে বলে?; শূন্য ত্রুটি কাকে বলে?; চূড়ান্ত ত্রুটি কি?; পরম ত্রুটি কাকে বলে?;

About Post Author

Related posts