কৃষি খাত ও শিল্প খাতের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাংলাদেশে কৃষি ও শিল্প খাতের পারস্পরিক
নির্ভরশীলতা নিম্নে আলোচনা করা হলো : বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিল্পই কৃষিভিত্তিক। উল্লেখযোগ্য শিল্প যেমন—পাট, চা, চামড়া, চিনি ও কাগজ প্রভৃতি প্রধান কাঁচামালের জন্য কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাই আমাদের যেসব অঞ্চলে আঞ্চলিক শিল্পায়ন ঘটে, যেমন-ঢাকা নারায়ণগঞ্জে পাট শিল্প, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে চা শিল্প ও উত্তরবঙ্গে চিনি শিল্প গড়ে উঠেছে। এসব শিল্পের প্রসারের ফলে কাঁচামালের বর্ধিত চাহিদার কারণে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পারে। ফলে কৃষকদের আয় বাড়বে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। আমাদের ক্ষুদ্র শিল্পের ভিত্তি হলো কৃষি। কৃষিতে উৎপাদিত বাঁশ-বেত ক্ষুদ্র শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে শিল্পে উৎপাদিত চাষাবাদের যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক ওষুধ ইত্যাদি কৃষিকাজে ব্যবহার হয়। তাই শিল্পজাত দ্রব্যের বাজার সৃষ্টিতে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কৃষকেেদর ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শিল্পখাতের অন্যান্য দ্রব্যের চাহিদা বৃদ্ধি পায়, যা শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কৃষির আধুনিকায়নের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারলে আমদানি ব্যয় বাঁচবে, যা শিল্পোন্নয়নে ব্যয় করা যাবে। এ দেশের
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, আমাদের কৃষি ও শিল্পের উন্নয়ন পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীল এবং একে অপরের পরিপূরক। তাই আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের জন্য দুটি খাতের একই সাথে উন্নতি একান্তভাবে কাম্য।