LIFO বনাম FIFO

LIFO বনাম FIFO (FIFO Vs. FIFO)

আগের মাল আগে ছাড়া পদ্ধতি (First in first out বা FIFO method) : মালের প্রকৃত প্রবাহ এবং ব্যয় প্রবাহ এই দুটি প্রবাহ রয়েছে যাদেরকে সম্পূর্ণ পৃথক দৃষ্টিকোণ হতে দেখা হয়ে থাকে।
মালের প্রকৃত প্রবাহ অনুসারে আগের মাল আগে ছাড়া পদ্ধতিটির অর্থ এটা নয় যে, প্রকৃতপক্ষে প্রথম চালানের মাল প্রথমে ছাড়তে হবে।
সাধরণত গুদামে মাল রাখার পর বিভিন্ন চালানের মাধ্যমে প্রাপ্ত একই প্রকার মালের পৃথক পৃথক পরিচয় থাকে না।
সুতরাং যখন ইস্যু করা হয় তখন কোন্ চালানের মাল ইস্যু করা হচ্ছে তা সাধারণত বিবেচনা করা হয় না। তবে পুরাতন মালগুলো যাতে আগে ছাড়া হয়।
সেভাবে মালগুলো সাজানো হয়। আমাদের আলোচ্য বিষয়ে আগের মাল আগে ছাড়া পদ্ধতি বা FIFO Method বলতে মালের ব্যয় প্রবাহকে বুঝানো হয়েছে।
অর্থাৎ ইস্যুকৃত মালের মূল্য নির্ধারণের সময় মাল খতিয়ান কার্ডে (Store ledger card) মজুত মালের মধ্যে প্রথম চালানের মাল যে মূল্যে মূল্যায়ন করা আছে, সে মূল্য ব্যবহার করা হবে।
প্রথম চালানের মালের মূল্য শেষ হলে দ্বিতীয় চালানের মূল্যে হাত দেওয়া হবে।
এরূপ পদ্ধতিতে প্রথমদিকে ক্রীত মালের মূল্যে ইস্যুকৃত মালের মূল্যায়ন করা হয় এবং শেষের দিকে ক্রীত মালের মূল্যে অবশিষ্ট মজুত মালের মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে।

Table of Contents

(FIFO Vs. FIFO)

এ পদ্ধতির সুবিধাসমূহ (Advantages) :
(i) এই পদ্ধতির একটি প্রধান সুবিধা হলো এই পদ্ধতিটি বুঝা এবং ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ।
(ii) এটি একটি যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতি কারণ, এই পদ্ধতিতে মালের ইস্যুর সময় ঐ সকল মালকেই বিবেচনা করা হয়, যেগুলো প্রথমে গ্রহণ করা হয়েছিল অর্থাৎ ক্রয়ের পর্যায়ানুসারে এই পদ্ধতিতে পণ্য ইস্যু করা হয়।
(iii) যেহেতু এই পদ্ধতিতে ক্রয় মূল্যে পণ্য ইস্যু করা হয় সেহেতু পণ্যের ক্ষেত্রে জব অর্ডার (Job order) বা ওয়ার্ক অর্ডার (Work order) এর খরচ ঠিকভাবে নির্ণয় করা যায়। এভাবে এই পদ্ধতি মালের খরচ মূল্য পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।
(iv) মূল্য যখন নিম্নগামী হয় তখন এই পদ্ধতিটির ব্যবহার যথেষ্ট উপকারী।
(vi) যেহেতু মজুত মালের মূল্যায়নের জন্য শেষদিকের ক্রয়মূল্য ব্যবহার করা হয়, সেহেতু মজুত মালের মূল্য বাজার মূল্যের কাছাকাছি হয়ে থাকে।
(vi) এই পদ্ধতিতে মালের প্রকৃত প্রবাহের সঙ্গে মালের ব্যয় প্রবাহের মিল রয়েছে।

(FIFO Vs. FIFO)

শেষের মাল আগে ছাড়া পদ্ধতি (Last in first out বা LIFO method): দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই পদ্ধতিটি সর্বপ্রথম আমেরিকায় প্রবর্তিত হয়।
এই পদ্ধতির ক্ষেত্রেও আমাদের আলোচ্য বিষয় মালের ব্যয় প্রবাহ। এই পদ্ধতিটিকে FIFO পদ্ধতির বিপরীত বলা যায়।
অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে সর্বশেষ ক্রয়ের হার অনুযায়ী ইস্যুকৃত মালের মূল্যায়ন হয় এবং সর্বশেষ ক্রীত মাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত পূর্ববর্তী ক্রয়ের হার ব্যবহার করা হয় না।
এভাবে প্রয়োজন অনুসারে নিচের দিক হতে ওপরের হারগুলো ব্যবহার করে ইস্যুকৃত মালের মূল্যায়ন করা হয় এবং সর্বপ্রথমে ক্রীত পণ্যের হারে সমাপ্তি মজুতের মূল্যায়ন করা হয়।

এ পদ্ধতির সুবিধাসমূহ ( Advantages):
(i) এই পদ্ধতির প্রধান সুবিধা হলো এটি বুঝা এবং ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ।
(ii) এই পদ্ধতিতেও পণ্য সংক্রান্ত উৎপাদন ব্যয় পুনরুদ্ধার করা সম্ভব কেননা, পণ্যের প্রকৃত খরচই উৎপাদনে চার্জ করা হয়।
(iii) যখন প্রতিষ্ঠানের খুব বেশি লেনদেন থাকে না এবং যখন পণ্যের মূল্যের স্থিরতা বজায় থাকে তখন এই পদ্ধতি ব্যবহার সুবিধাজনক।
(iv) যেহেতু সর্বশেষ ক্রীত মালের দরে ইস্যুকৃত মালের মূল্যায়ন করা হয় সেহেতু ইস্যুকৃত মূল্য ও বাজার মূল্য প্রায় একইরূপ থাকে।
(v) উঠতি মূল্যের সময় এই পদ্ধতিতে লাভ কম হয় বলে এটি আয়কর বাঁচাতে সাহায্য করে।
(vi) এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে বাজার মূল্যের উঠানামা বা হ্রাসবৃদ্ধি লাভ-ক্ষতিকে বেশি প্রভাবিত করতে পারে না, কারণ উৎপাদন ব্যয় ও বিক্রয় একই দিকে উঠানামা করে।

About Post Author

Related posts