কালান্তিক মজুদ পদ্ধতি কী? এর সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করুন। (What is periodical inventory system. Discuss its advantages and disadvantages.)
কালান্তিক মজুদ পদ্ধতি: কালান্তিক মজুদ প্রণালীর মাধ্যমে সারা বছরব্যাপী হাতে মজুদ পণ্যের Inventory Record সংরক্ষণ করা হয় না।
বিক্রীত পণ্যের ব্যয় নির্ণয় করা হয় একটি হিসাবকালের শেষে।
হিসাবকাল শেষে মজুদ পণ্যের বাহ্যিক গণনার মাধ্যমে হাতে মজুদ পণ্যের ব্যয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
এ পদ্ধতির মাধ্যমে বিক্রিত পণ্যের ব্যয় নির্ধারণ করা হয় হিসাবকাল শুরুর মজুদ পণ্যের ব্যয় মূল্য নির্ধারণ করে তার সাথে পণ্য ক্রয়ের ক্রয়মূল্য যোগ করে যোগফল হতে হিসাবকাল শেষের মজুদ পণ্যের ব্যয় মূল্য বাদ দিয়ে।
ছোটখাট ও খুচরা ধরনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, যেমন—ঔষধের ফার্মেসী, হার্ডওয়ার, মুদি, বস্ত্র দোকনদার ইত্যাদি যারা তুলনামূলকভাবে অনেক স্বল্প মূল্যের অনেক প্রকার সামগ্রী বিক্রী করে, তারা সাধারণত কালান্তিক মজুদ প্রণালী অনুসরণ করে বিক্রীত পণ্যের ব্যয় এবং আন্তঃমজুদ পণ্যের মূল্য নিরূপণ করে। এ ধরনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসমূহে নিত্য মজুদ তালিকা প্রণালী ব্যবহার করা ব্যয় ও শ্রম সাপেক্ষ বিষয়। এ পদ্ধতিতে মজুদ পণ্যের জন্যে পৃথক কোন খতিয়ান হিসাব রাখা হয় না, বরং বছরান্তে নির্দিষ্ট দিনে হাতে মজুদ পণ্য সংখ্যা X ক্রয়মূল্য = আন্তঃমজুদ মূল্য নিরূপণ করা হয়।
“আর পড়ুনঃ” Periodic এবং Perpetual মজুদ পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য কী?
সুবিধাসমূহ (Advantages):
১. এ পদ্ধতি কম ব্যয়বহুল কারণ মজুদ পণ্য গণনার জন্য স্থায়ী কোন কর্মচারী নিয়োগ করতে হয় না।
২. এটি ক্ষুদ্রায়তন প্রতিষ্ঠানে এবং যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান নানা প্রকারের পণ্য বিক্রয় করে সে সকল প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়।
৩. এ পদ্ধতিতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর পণ্যের মজুদ নির্ধারণ করা হয় বিধায় ব্যবসায়ের স্বাভাবিক কাজকর্মের কোন প্রকার বিঘ্ন ঘটে না।
৪. এ পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট দিনে সকল প্রকার পণ্যের মজুদ নির্ণয় করা হয় বলে মজুদ মালের পরিমাণ নির্ভরযোগ্য হয়।
অসুবিধাসমূহ (Disadvantages):
১. মজুদ মাল গণনার সময় ব্যবসায়ের স্বাভাবিক কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটে।
২. সময় স্বল্পতার জন্য মজুদ পণ্যের গণনার কাজ তাড়াহুড়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়।
৩. এ পদ্ধতিতে জালিয়াতি ও গড়মিলের সম্ভাবনা বেশি থাকে; কেননা এখানে পণ্যের উপর নিয়মিত বা ধারাবাহিক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয় না।
৪. সময় অতিক্রান্ত হওয়ার জন্য প্রকৃত মজুদ মাল ও হিসাবে প্রদর্শিত মালের পার্থক্যের কারণ সহজে খুঁজে বের করা যায় না।
৫. এ পদ্ধতিতে পণ্য মজুদ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা খুব দুর্বল। ফলে কর্মচারীরা অসাধু হওয়ার সুযোগ পায়।