আর্থিক বিবরণীসমূহ কিভাবে বিশ্লেষণ করা হয় ? (How are the Financial Statements analysed?)
অথবা, আর্থিক বিবরণীসমূহ বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যাকরণের পদ্ধতিগুলো আলোচনা করুন। (Discuss the methods of analysis and interpretation of Financial Statement.)
→ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। যেমন—
১, বিশ্লেষণকারীর প্রকৃতি ও তার ব্যবহার করা তথ্যের ভিত্তিতে।
২. বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে পরিপ্রেক্ষিতে এবং
৩. বিশ্লেষণ বর্ণনার উপায়ের পরিপ্রেক্ষিতে। নিচে এদের সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো :
“আর পড়ুনঃ” বাংলাদেশি কোম্পানিসমূহের আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আলোচনা করুন।
১. বিশ্লেষণকারীর প্রকৃতি ও তার ব্যবহার করা তথ্যের ভিত্তিতে (On the basis of the nature of analyst and the materials used by him) এর ভিত্তিতে যে বিশ্লেষণ করা হয় তাকে দুভাবে ব্যাখ্যা করা যায় : (i) বহির্মুখী বিশ্লেষণ এবং (ii) অন্তর্মুখী বিশ্লেষণ।
“আর পড়ুনঃ” নগদ ভিত্তি বনাম বকেয়া ভিত্তি (Cash Basis Vs. Accrual Basis)
(i) বহির্মুখী বিশ্লেষণ (External analysis) : এ ধরনের বিশ্লেষণ বাইরের কোনো ব্যক্তি করে থাকেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের বিস্তৃত হিসাবের তথ্য চাইবেন না, কেবল মুদ্রিত আর্থিক বিবরণীর ওপর নির্ভর করেন।
এ ধরনের বিশ্লেষণ বাইরের কোনো পক্ষ, যেমন—ব্যাংক ঋণদানকারী সংজ্ঞা, ব্যবসায়িক পাওনাদারগণ সম্পাদন করে। থাকেন।
(ii) অন্তর্মুখী বিশ্লেষণ (Internal Analysis) : আর্থিক বিবরণীর অন্তর্মুখী বিশ্লেষণ তখনই বলা হবে যখন প্রতিষ্ঠানের ভেতরের কোন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের বিস্তৃত আর্থিক বিবরণী পর্যবেক্ষণ করেন। এদের অভ্যন্তরীণ বা ভেতরের বলার কারণ হলো—এর প্রতিষ্ঠানের সদস্য, তাই আর্থিক তথ্যের সাথে এদের সরাসরি সম্পর্ক আছে। এ ধরনের বিশ্লেষণ প্রধানতঃ প্রতিষ্ঠানের কর্মিগণই করেন, বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবস্থাপনাকে অবহিত করার জন্য।
“আর পড়ুনঃ” হিসাব তথ্যের ব্যবহারকারীগণ তত্ত্বসমূহের কি ধরনের ব্যবহার করেন তা উল্লেখ করুন।
২. বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে পরিপ্রেক্ষিতে (On the basis of the objectives of the analysis) : বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ দু’ধরনের হতে পারে। যথা- (i) স্বল্পমেয়াদি বিশ্লেষণ ও (ii) দীর্ঘমেয়াদি বিশ্লেষণ ।
আর্থিক বিবরণীসমূহ বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যাকরণের পদ্ধতিগুলো আলোচনা করুন।
(i) স্বল্পমেয়াদি বিশ্লেষণ (Short-term analysis) : কারবারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছলতা ও তরলত্ব নির্ধারণ করতে এ ধরনের বিশ্লেষণ করতে হয়। স্বল্পকালে প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত পরিমাণ তহবিল আছে কিনা তা নির্ধারণ করতে স্বল্পমেয়াদি বিশ্লেষণ করা হয় যাতে অদূর ভবিষ্যতে দায় মেটানো সম্ভব হতে পারে।
(ii) দীর্ঘমেয়াদি বিশ্লেষণ (Long-term analysis) : কোনো প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্থিতিশীলতা, সচ্ছলতা ও তরলত্ব সমীক্ষা করার জন্য এ জাতীয় বিশ্লেষণের প্রয়োজন হয়।
৩. বিশ্লেষণ বর্ণনার উপায়ের পরিপ্রেক্ষিতে (On the basis of the manner of presenting the analysis) : এ জাতীয় বিশ্লেষণ দু’প্রকারের হয়। যথা—(i) অনুভূমিক বিশ্লেষণ ও (ii) উল্লম্ব বিশ্লেষণ।
(i) অনুভূমিক বিশ্লেষণ (Horizontal analysis) : একাধিক আর্থিক বছরের আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ করতে এ জাতীয় বিশ্লেষণের প্রয়োজন।
কয়েক বছরের আর্থিক তথ্য নিয়ে এ বিশ্লেষণ করা হয়।
(ii) উল্লম্ব বিশ্লেষণ (Vertical analysis) : এখানে শুধু একটি আর্থিক বছরের বিশ্লেষণ করা হয়। এ বিশ্লেষণকে স্থানু বিশ্লেষণ বলে।
কোনো একটি নির্দিষ্ট বছরের পরিপ্রেক্ষিতে আর্থিক বিবরণীর অনুপাত বিশ্লেষণ এ জাতীয় বিশ্লেষণের দৃষ্টান্ত।