ভাইরাস (Virus) কি? ভাইরাসের ইতিহাস, বৈশিষ্ট্য, শ্রেণিবিন্যাস, গঠন, গুরুত্ব।
ভাইরাসের ইতিহাস
ভাইরাস একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ বিষ (poison)। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম ভাইরাস সৃষ্ট মোজাইক রোগের বর্ণনা দেন বিজ্ঞানী অ্যাডোলফ মায়ার (Adolf Mayer)। তিনি তামাক গাছের পাতায় রোগ। ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে রুশ জীবাণুবিদ দিমিত্রি আইভানোভসকি (Dmitri Iwanowsky) তামাক গাছের মোজাইক রোগের কারণ হিসেবে ভাইরাসের উপস্থিতি প্রমাণ করেন। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকান বিজ্ঞানী স্ট্যানলি (Stanley) তামাকের মোজাইক ভাইরাস (TMV)-কে রোগাক্রান্ত তামাক পাতা থেকে পৃথক করে কেলাসিত করতে সক্ষম হন। এজন্য তিনি ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কার পান। ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে পিরি (Pirie) এবং বদেন (Bawden) ভাইরাসের দেহ প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিডে গঠিত তা প্রমাণ করেন। ইলেকট্রন অণুবীক্ষণযন্ত্র আবিষ্কারের পরবর্তী সময়ে (১৯৪০-১৯৯৬) ভাইরাসের ভৌত গঠন সম্বন্ধে নতুন নতুন ধারণা পাওয়া যায়। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে শেফারম্যান (Shafferman) এবং মরিস (Morris) সায়ানোব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী সায়ানোফাজ আবিষ্কার করেন। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে গ্যালো (Gallow) মানুষের মরণব্যাধি এইডস রোগের ভাইরাস আবিষ্কার করেন। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে মানুষের নীরব ঘাতক হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবিষ্কৃত হয়।
ক্ষরণকারী টিস্যু কি? এর প্রকারভেদ
ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য
- ভাইরাস অকোষীয়, অতিঅণুবীক্ষণিক (ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ ছাড়া দেখা যায় না) ও কণিকার মতাে দেহবিশিষ্ট একপ্রকার গঠন বিশেষ।
- পূর্ণ পরজীবী; কেবল উপযুক্ত পােষকের অভ্যন্তরে সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটায়।
- পােষক দেহের বাইরে ভাইরাস নির্জীব স্ফটিকের মতাে অবস্থান করে।
- ভাইরাস রাসায়নিকভাবে নিউক্লিক এসিড ও প্রােটিন দিয়ে গঠিত। দেহে কেবল একধরনের নিউক্লিক এসিড (DNA অথবা RNA) থাকে।
- ভাইরাসের প্রােটিনগুলাে পােষকের রাইবােজোমে সংশ্লেষিত হয়।
- এটি প্রতিরূপ সৃষ্টি করে সংখ্যাবৃদ্ধি করে এবং জীবদেহের বিশেষ বিশেষ রােগ সৃষ্টি করে।
- ভাইরাসের নিজস্ব কোন বিপাকীয় ক্ষমতা নেই; এরা এসিড, লবণ ও ক্ষার প্রতিরােধ করতে পারে।
- এগুলাের অভিযােজন (adaptation) ক্ষমতা অসাধারণ।
- ভাইরাসের প্রতিরােধ ক্ষমতা অনন্য, তাই অত্যন্ত ছোঁয়াচে।
- এগুলাে আকারে বৃদ্ধি পায় না এবং বাহ্যিক কোন উদ্দীপনায় সাড়া দেয় না।
- একক সূত্রক DNA (যেমন- কোলিফাজ ভাইরাস)।
- দ্বিসূত্রক DNA (যেমন- ভাকসিনিয়া ভাইরাস)
- একক সূত্রক RNA (যেমন- TMV)
- দ্বিসূত্রক RNA (যেমন- রিওভাইরাস, ধানের বামন রোগের ভাইরাস)