আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে?
উত্তরঃ পরোপকার একটি বিশেষ গুণ। আত্মকেন্দ্রিক জীবনযাপনের জন্য মানুষ পৃথিবীতে আসেনি। পরের কল্যাণে আত্মস্বার্থ বিসর্জন দেওয়ার মধ্যেই মানবজীবনের প্রকৃত সার্থকতা নিহিত। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের সবাইকে নিয়ে তাকে চলতে হয়। কিন্তু কিছু মানুষ আছেন যারা আত্মকেন্দ্রিক ও স্বার্থপর। তারা সমাজ-সংসারের কথা ভুলে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে তাদের নজর বেশি। অথচ সমাজ-সংসারের কাছে প্রত্যেকের সীমা-পরিসীমা নেই।সামাজিক জীব হিসেবে সংবদ্ধ সমাজ জীবনেই তাকে দিয়েছে নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলাময় অনুকূল পরিবেশ। ব্যক্তি মানুষের কল্যাণে সমাজ যেমন এগিয়ে আসে, তেমনি সমাজও প্রত্যাশা করে তার বৃহত্তর কল্যাণে ব্যক্তিমানুষ ক্ষুদ্র স্বার্থে কথা ভুলে সহযোগিতার হাত বাড়াবে, প্রয়োজনীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবে।সমাজের প্রতিটি মানুষ পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। তাই প্রত্যেকের প্রতি প্রত্যেকের দায়িত্ব রয়েছে। আমরা যদি অসহায়, অবলম্বনহীন মানুষ দেখে চুপ করে বসে থাকি তাহলে তা হবে আমাদের হীন মানসিকতার পরিচায়ক। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ও সব ভেদাভেদ ভুলে সকলের এগিয়ে আসা উচিত। মানুষ মানুষের জন্য। মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করাতেই জীবনের সার্থকতা। সংঘবদ্ব সমাজজীবনে আত্মকেন্দ্রিক ভাবনা-চিন্তা, স্বার্থপর মনোবৃত্তি এবং কার্যকলাপ সামাজিক কল্যাণের পরিপন্থী। আত্মকেন্দ্রিক একক জীবন ভয়ঙ্কর দুঃসহ। সমাজের সকলকে নিয়ে একসঙ্গে বাচাই হচ্ছে যথার্থভাবে বেঁচে থাকা। এজন্য সবাইকে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। পরের কল্যাণের জন্য সবসময় নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। মানুষ যদি কেবল স্বার্থ নিয়ে মগ্ন থাকত তাহলে পৃথিবীতে সভ্যতায় বিকাশ কোনদিনই সম্ভব হতো না।