প্রাণ থাকলেই প্রাণী হয়, কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হয় না?
উত্তরঃ মানুষকে বলা হয় সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষের সঙ্গে অন্য প্রাণীর পার্থক্য এখানে যে মানুষের একটি সুন্দর মন আছে। এ মনই মানুষকে মনুষ্যত্বের বলিয়ান করেছে, দিয়েছে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা। মানুষকে বলা হয় দ্বিজ অর্থাৎ দুবার জন্মগ্রহণকারী। এ দ্বিতীয় জন্ম বলতে মানবিক গুণাবলি অর্জন করে প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠাকে বোঝায়। একটি শিশু যখন জন্ম নেয়, তখন সে অন্যান্য প্রাণীর মতোই অসহায় থাকে। অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গে তার তখন খুব একটা পার্থক্য থাকে না। পরবতীকালে শিক্ষাদীক্ষার মাধ্যমে মানুষ অর্জন করে মানবিক গুণাবলী। তখন তার আত্মশক্তির বিকাশ ঘটে। সে প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে এবং নিজেকে নতুন করে উপলব্ধি করতে শেখে। অপরদিকে মনুষত্ব বিবর্জিত মানুষ বাহ্যুিকভাবে মানুষের মতো হলেও অন্যান্য প্রাণী ও তার মধ্যে শারীরিক পার্থক্য ছাড়া বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। আমরা জানি, সকল প্রাণীরই জৈবিক বৃত্তি আছে। কিন্তু মানুষেরে এ বৃওির পাশাপাশি আছে মনুষ্যত্ব, বিবেক ও মানবিক গুণাবলী। এ গুণাবলী মানুষকে অন্যান্য প্রাণী থেকে পৃথক করেছে। মানুষের মন আছে বলেই হৃদয়বৃত্তির বিকাশের সুযোগ পেয়েছে। যে ভিত্তি ভালো মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বিবেচনা করতে পারে সে যথার্থ মানুষ। আর যে কখনো মন্দ কাজ করতে দ্বিধা করে না, নিজের জন্য যা শ্রেয় মনে করে অন্যের ক্ষতি হলেও তাই করে, সে পূর্ণাঙ্গ মানুষ নয়। প্রাণ থাকলেই একজন মানুষ সত্যিকার অর্থে মানুষ হয়ে ওঠেনা। মন আছে বলেই মানুষ পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী। প্রাণ নয়, মনের মানুষকে স্বমহিমায় পরিচিত করে তোলে।