অর্থই অনর্থের মূল?
উত্তরঃ এ পৃথিবীতে মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রের অর্থের প্রয়োজন। অর্থ এমনই গুরুত্বপূর্ণ যে, ঠিকভাবে সদ্ব্যব্যহার না করলে অনেক সময় অনর্থের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অর্থ জীবনের জন্য খুবই অপ্রয়োজনীয়। কারণ মানবজীবনের প্রতি ক্ষেত্রের কার্যকারিতা অর্থের ওপর নির্ভরশীল। অর্থই আজীবন মানুষের সকল চাওয়া-পাওয়া প্রয়োজন মেটায়। অর্থ না থাকলে জীবনে দুঃখ-কষ্টের শেষ থাকে না। অর্থ না থাকলে অনেক সময় জীবনকে মূল্যহীন বা অর্থহীন বলে মনে হয়। এজন্যই মানুষ অর্থের পিছনে ছুটে চলেছে নিরন্তর। কি করে অঢেল অর্থ উপার্জন করা যায় সে চেষ্টা ও শেষ নেই। কিন্তু অনেক কষ্ট ও সাধনার এ অর্থই অনেক সময় অনর্থের মূল হয়ে দাঁড়ায়। কারণ বেশি অর্থ মানুষকে অন্যায়ের পথে, অপরাধের পথে ঠেলে দেয়। বেশি অর্থ অনেক সময় মানুষকে অমানুষ করে তোলে। অর্থকে কেন্দ্র করে পৃথিবী জুড়ে ঘটে চলেছে নানাবিধ ভয়ঙ্কর, জঘন্য, অমানবিক ও কল্যাণকর ঘটনা। অর্থের মোহ বড়ই ভয়ানক। অর্থের কারণে পিতা-পুত্র, ভাই ভাই, রাজায় রাজায়, দেশে-দেশে ঘটে চলেছে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা। মুক্তিপণ দাবি করে অর্থ আদায় করা হয়, না দিলে প্রাণহানি ঘটে। আর যাদের অর্থ আছে তারা অর্থের বিনিময় প্রিয়জনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালায়। অর্থের লোভে এমনই ভয়ানক যে, মানুষ বিবেক, মনুষত্ব, নীতি বিসর্জন দিতে দ্বিধা করে না। সমাজ আর এক ভয়ানক ব্যাধি যৌতুক,যার বলি হচ্ছে অসংখ্য কন্যাসন্তান। এ কথা অস্বীকার করা যায় না যে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অন্যায় অনাচার ও দুর্নীতি ইত্যাদির পিছনে অনেক সময় অর্থই প্রধান ভূমিকা পালন করে। তবে অর্থের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন থাকলে তা অনেক সময় মর্যাদা বৃদ্ধি করে। অর্থের ব্যবহারকারী, ব্যবহার ও কার্যকারিতার ওপরেরই ভালো-মন্দ ভূমিকা নির্ভর করে।