দ্বার বন্ধ করে দিয়ে ভ্রমটারে রুখি সত্য বলে, আমি তবে কোথা দিয়ে ঢুকি?
উত্তরঃ মানবজীবন ও জগতে ভালো-মন্দ সুন্দর অসুন্দরের মতো সত্য- মিথ্যাও পাশাপাশি অবস্থান করে। এগুলোর একটিকে ছাড়া অন্যটিকে যথাযথ ভাবে উপলব্ধি করা যায় না। জীবনে যদি সত্য মিথ্যার উভয়ের সাথে একএে চলা যায় তাহলেই সত্যের আলোকে মিথ্যাকে চেনা সহজ হয়। যারা শুধু সত্য লাভের পথ খোঁজে তারা কখনোই দুর্লভ সত্যকে খুঁজে পায় না। কারণ জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই সত্য-মিথ্যাকে চেনা যায়। মানবজীবনের চলার পথে সত্য-মিথ্যা একসঙ্গে জড়িয়ে আছে। একটিকে ছাড়া অন্যটির কোন অস্তিত্ব নেই।ভালো-মন্দ উভয় ধরনের ঘটনাবলিই মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে। সত্য না থাকলে যেমন মিথ্যাকে চেনা যায় না, তেমনি মিথ্যা না থাকলে সত্যকে চেনা সম্ভব নয়। ভুলভ্রান্তিকে বাদ দিয়ে যারা কেবল সত্যের সন্ধান করে তারা দুর্লভ সত্যিকে সহজে পায় না। বাস্তব জীবনে নানা কারণে অনেক সময় অকৃতকার্যতা ও ব্যর্থতা আসে। এ ব্যর্থতা ও ভুলভ্রান্তির পথ পার হয়েই মানুষ সত্যের সন্ধান পায়। বস্তুত, ভুলের বা মিথ্যার মধ্যে দিয়েই মানুষ তার কাঙ্খিত শত্যের দেখা পাই। জীবনের চলার পথে নানা ভুলভ্রান্তি ও মিথ্যাকে অতিক্রম করেই মানুষ সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াই। মানুষ নীতি-আদর্শ অভিজ্ঞতা দিয়ে সত্যকে চিনে নেয়। এবং সত্যের আলোকে জীবনকে উদ্ভাসিত করে। জীবনের চলার ধার বন্ধ করে হয়তো মিথ্যাকে বাধা দেওয়া যায়, কিন্তু এতে সত্যকে পাওয়া যায়না। খোলা দরজা দিয়েই সত্য আর মিথ্যা জীবনের অঙ্গনে এসে এক সাথে প্রবেশ করে। মানুষ স্বয়ং তার বোধ ও বিবেচনা দিয়ে যেটি সঠিক সেটিকে বেছে নেয়। সত্য মিথ্যা, ভালো-মন্দ উভায়ইকে মোকাবেলা করে সত্যকে অনুসরণ করলে জীবনে সাফল্য আসবে। জীবন চলার পথে ভুলভ্রান্তি নানা অন্তরায় সৃষ্টি করে। এ অন্তরায়ই চিনতে সাহায্য করে। তাই বলা হয়, মিথ্যার অন্ধকারে মানুষ সত্যকে এবং সত্যের আলোতে মিথ্যাকে চিনতে পারে।