লেদদেন লিপিবদ্ধকরণের ধাপগুলো কী কী?

লেদদেন লিপিবদ্ধকরণের ধাপগুলো কী কী? (What are the steps of recording process ?) অথবা, হিসাব লিপিবদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার মৌলিক ধাপগুলো কী কী? (What are basic steps in the recording process?)

লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ প্রক্রিয়া হলো একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া বা নিয়মকানুন।
প্রত্যেক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানই হিসাববিজ্ঞানের স্বীকৃত নিয়মকানুন মেনেই লেনদেন হিসাবভুক্ত করে।
সংঘটিত লেনদেনগুলো সরাসরি খতিয়ানে হিসাবভুক্ত করা যায়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়:

১. হিসাব খাতে লেনদেনের প্রভাব বিশ্লেষণ অর্থাৎ ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয় (Effect on Transactions / Determination Debit or Credit): প্রত্যেকটি লেনদেনের দুটি দিক থাকে। একটি ডেবিট দিক এবং অপরটি ক্রেডিট দিক।
যে গ্রহণ করে বা যা গ্রহণ করা হয় তা ডেবিট এবং যে দেয় বা যা দেওয়া হয় তা ক্রেডিট।
প্রত্যেক লেনদেনেই কোন কিছুর আদান-প্রদান হয়ে থাকে। সুতরাং একটি লেনদেনে আদান-প্রদানের জন্য দুটি পক্ষের প্রয়োজন।
লেনদেনের প্রকৃতি অনুযায়ী এই পক্ষগুলো কোনটা কোন্ প্রকৃতির তা ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা যায়। অর্থাৎ কোন্ খাতটি ব্যক্তি সম্পর্কিত, কোন্‌টি সম্পত্তি ও দায় সম্পর্কিত, কোনটি আয়-ব্যয় সম্পর্কিত সেটি বিশ্লেষণ করতে হয়।

২. লেনদেনগুলো জাবেদায় লিপিবদ্ধকরণ (Journalising) : পেনদেনগুলো প্রকৃতি অনুযায়ী পৃথকীকরণের পর দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির নিয়ম অনুযায়ী ক্রমানুসারে পরপর সেগুলো হিসাবের বই বা জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। জাবেদায় লিপিবদ্ধকরণের সময় নির্দিষ্ট ছক ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি জাবেদার শেষে ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়।

লেদদেন লিপিবদ্ধকরণের ধাপগুলো কী কী?

৩. জাবেদা থেকে খতিয়ানে স্থানান্তর (Posting Journal to Ledger) : জাবেদায় লিপিবদ্ধ করার মাধ্যমে যাবতীয় লেনদেনের স্থায়ী রেকর্ড করা সম্ভব হয়। জাবেদা বইতে যে সব লেনদেন লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল সেগুলো আলাদা আলাদাভাবে নির্দিষ্ট শিরোনামে শ্রেণীবদ্ধ করে খতিয়ানে তোলা হয়।
এর ফলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এক একটি হিসাব খাত থেকে এই খাতের মোট মূল্য জানা যায়।
লেনদেনগুলো জাবেদাভুক্ত না করে সরাসরি খতিয়ানেও তোলা যায় কিন্তু ভুলত্রুটি থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এভাবে খতিয়ানভুক্তির মাধ্যমে ব্যবসায়ের যে কোন খাত বা শিরোনামের সঠিক উদ্বৃত্ত জানা যায়। পদক্ষেপগুলো নিম্নলিখিতভাবে উপস্থাপন করা যায়:

লিপিবদ্ধকরণ প্রক্রিয়া
১. লেনদেনের প্রভাব বিশ্লেষণ
২. জাবেদাভুক্তকরণ
৩. খতিয়ানভুক্তকরণ

খতিয়ানভুক্তকরণ
১. সম্পত্তি সংক্রান্ত খতিয়ান
২. দায় সংক্রান্ত খতিয়ান
৩. আয় সংক্রান্ত খতিয়ান
৪. ব্যয় সংক্রান্ত খতিয়ান

[চিত্র : লিপিবদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার ধাপসমূহ]

পরিশেষে বলা যায়, প্রথমে লেনদেন সংঘটিত হয়, লেনদেনগুলো বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট হিসাবগুলো নির্দিষ্ট করা হয়, হিসাব চিহ্নিত হবার পর লেনদেন জাবেদাভুক্ত করা হয়। চূড়ান্তভাবে জাবেদাভুক্ত দাখিলা খতিয়ান বহির সংশ্লিষ্ট হিসাবে স্থানান্তর করে লিপিবদ্ধকরণ প্রক্রিয়া সম্পাদন করা হয়।

About Post Author

Related posts