মূলধন ও চলতি হিসাব বলতে কী বুঝেন? মূলধন ও চলতি হিসাবের মধ্যকার পার্থক্য দেখান।
(What do you mean by capital and current account and show the difference between. capital and current account?)
মূলধন হিসাব: অংশীদারি ব্যবসায়ে অংশীদারগণ কর্তৃক সরবরাহকৃত মূলধনের পরিমাণ লিপিবদ্ধকরণের জন্য প্রত্যেক অংশীদারের নামে পৃথক যে হিসাব সংরক্ষণ করা হয় তাকে অংশীদারদের মূলধন হিসাব বলে।
ব্যবসায়ের মোট মূলধনের পরিমাণ অংশীদারদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থির করা হয়।
প্রয়োজনে প্রত্যেক অংশীদারের জন্য পৃথক পৃথক মূলধনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।
চলতি হিসাব: অংশীদারি ব্যবসায়ের স্থিতিশীল মূলধন হিসাব পদ্ধতিতে অংশীদারদের মূলধন হিসাব সংরক্ষণ করা হলে অংশীদারদের মূলধন ব্যতীত অন্যান্য বিষয়; যেমন: মূলধরনের সুদ, বেতন, কমিশন, মুনাফার অংশ, লোকসানের অংশ,উত্তোলন, উত্তোলনের সুদ ইত্যাদি হিসাবভুক্ত করার জন্য পৃথক যে হিসাব সংরক্ষণ করা হয় তাকে অংশীদারদের চলতি হিসাব বলে।
বছর শেষে চলতি হিসাবের জের নির্ণয় করা হয়। চলতি হিসাবের ডেবিট অথবা ক্রেডিট কোর হতে পারে।
সাধারণত মূলধন হিসাবের ক্রেডিট দিকে যেসব দক্ষ্য লিপিবন্ধ করা হয় তা চলতি হিসাবেরও ক্রেডিট দিকে লিপিবদ্ধ করতে হয়। আবার মূলধন হিসাবের ডেবিট দিকে যেসব দফা লিপিবদ্ধ করা হয় তা চলতি হিসাবের ডেবিট দিকে লিপিবদ্ধ করতে হয়।
“আর পড়ুনঃ” সমান্তরাল ও উল্লম্ব বিশ্লেষণের মধ্যে পার্থক্য দেখান
মূলধন ও চলতি হিসাব বলতে কী বুঝেন?
অংশীদারদের মূলধন হিসাব ও চলতি হিসাবের মধ্যে পার্থক্যসমূহ: নিচে অংশীদারদের মূলধন হিসাব ও চলতি হিসাবের মধ্যে পার্থক্যসমূহ আলোচনা করা হলো:
পার্থক্যের বিষয় | অংশীদারদের মূলধন হিসাব | অংশীদারদের চলতি হিসাব |
১. সংজ্ঞা | অংশীদারি কারবারে প্রত্যেক অংশীদারের সরবরাহকৃত প্রাথমিক মূলধনের হ্রাস-বৃদ্ধি পরিমাপ করার জন্য যে হিসাব সংরক্ষণ করা হয়। তাকে অংশীদারদের মূলধন হিসাব বলে। | যেসব কারণে অংশীদারদের প্রাথমিক মূলধনের পরিবর্তন অর্থাৎ হ্রাস-বৃদ্ধি হয়ে থাকে সেসব লেনদেনকে লিপিবদ্ধ করার জন্য প্রত্যেক অংশীদারের নামে পৃথক যে হিসাব সংরক্ষণ করা হয় তাকে অংশীদারদের চলতি হিসাব বলা হয়। |
২. উৎস | অংশীদারদের মূলধন হিসাবের উৎস হচ্ছে অংশীদারদের বিনিয়োগকৃত মূলধন ও সম্পত্তি। | অংশীদারদের চলতি হিসাবের উৎস ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের চলতি বছরের শেষে অংশীদারদের লাভ-লোকসানের অংশ, মূলধনের সুদ, বেতন, কমিশন, উত্তোলন ও উত্তোলনের সুদ, ঋণের সুদ ইত্যাদি। |
৩. শ্রেণীবিভাগ | অংশীদারদের মূলধন হিসাব স্থায়ী ও চলতি হিসাব শুধুমাত্র স্থায়ী ও ক্রেডিট উভয় পরিবর্তনশীল—এ দুটি পদ্ধতিতে হতে পারে। | চলতি হিসাব শুধুমাত্র স্থায়ী ও ক্রেডিট উভয় উদ্বৃত্তই হতে পারে । |
৪. উদ্বৃত্ত | স্থায়ী মূলধনের ক্ষেত্রে মূলধন হিসাবে সাধারণত ক্রেডিট উদ্বৃত্ত হয়ে থাকে। | চলতি হিসাবে ডেবিট ও ক্রেডিট উভয় উদ্বৃত্তই হতে পারে। |
৫. প্রয়োজনীয়তা | মূলধন হিসাব প্রয়োজন অনুযায়ী স্থায়ী ও পরিবর্তনশীল মূলধন’—উভয় পদ্ধতির যেকোনো একটি পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হতে পারে। | চলতি হিসাব শুধুমাত্র স্থায়ী বা স্থিতিশীল মূলধন হিসাব পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করার প্রয়োজন হয়। |
৬. পরিবর্তন | অংশীদারদের মূলধন হিসাবের কোনো পরিবর্তন হয় না। কেবলমাত্র নতুন বা অতিরিক্ত মূলধন । প্রদান করার মাধ্যমেই এ হিসাবের পরিবর্তন হয়ে থাকে। | হিসাব বছরের বিভিন্ন আয়-ব্যয়ের তারতম্যের কারণে চলতি হিসাবের পরিবর্তন সাধিত হয়ে থাকে। |
৭. হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি | অংশীদারগণ মূলধন প্রদান করে থাকলে তা মূলধন হিসাবের ক্রেডিট দিকে লেখা হয় এবং ডেবিট দিকে উদ্বৃত্ত দেখানো হয়। | যেসব লেনদেন দ্বারা মূলধন বৃদ্ধি পায় তা চলতি হিসাবের ক্রেডিট দিকে এবং মূলধন হ্রাস পেলে তা ডেবিট দিকে দেখানো হয়। |
৮. বাধ্যতামূলক | অংশীদারি ব্যবসায়ের মূলধন হিসাব খোলা বাধ্যতামূলক। | অংশীদারি ব্যবসায়ের চলতি হিসাব খোলা বাধ্যতামূলক নয়। |
৯. লেনদেনের প্রভাব | এ হিসাব অংশীদারগণের চলতি দেনা-পাওনা দ্বারা প্রভাবিত হয় না | এ হিসাব অংশীদারগণের চলতি দেনা-পাওনা দ্বারা প্রভাবিত হয়। |
১০. ফলাফল | এ হিসাবের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর অংশীদারগণ কর্তৃক প্রদত্ত মোট মূলধনের পরিমাণ জানা যায়। | এ হিসাবের মাধ্যমে অংশীদারদের চলতি দেনা পাওয়ার পরিমাণ সম্পর্কে জানা যায়। |