খতিয়ানের উদ্দেশ্য কী? (What are the objects of ledger?)
হিসাবরক্ষণ প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বা স্তর হলো খতিয়ান। এটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ কারণ এখানে লেনদেনসমূহ শ্রেণীবদ্ধভাবে পাকাপাকিভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়। খতিয়ানের বহুবিধ উদ্দেশ্য রয়েছে যা নিচে বর্ণিত হলো:
১. স্থায়ী ও পাকাপাকিভাবে হিসাব সংরক্ষণ (Parmanent recording): খতিয়ান রাখার প্রধান উদ্দেশ্য হলো লেনদেনসমূহের স্থায়ী ও পাকাপাকিভাবে সংরক্ষণ করা। ফলে পরবর্তী যে কোন সময়ে লেনদেন সংক্রান্ত যে কোন তথ্য পেতে সহজ হয়।
“আর পড়ুনঃ” খতিয়ানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করুন।
২. হিসাবের ফলাফল নির্ণয় (Determination of results of account): খতিয়ানের মাধ্যমে হিসাবসমূহকে পৃথক পৃথকভাবে শ্রেণীবিভাগ করা হয়। এর ফলে হিসাবসমূহের ফলাফল নিরূপণ করা যায় ।
“আর পড়ুনঃ” আন্তঃ অডিট (Internal Audit)
৩. সহজে তথ্য পাওয়া যায় ( Easily getting information): লেনদেন সংঘটনের তারিখের ক্রম অনুযায়ী প্রাথমিক বই হতে ডেবিট ক্রেডিট বিশ্লেষণ করে খতিয়ানে স্থানান্তর করা হয়। এতে লেনদেনের তথ্য খুব সহজে পাওয়া যায়।
৪. সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে হিসাব সংরক্ষণ (Maintaining proper and correct account): খতিয়ান রাখার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে হিসাব সংরক্ষণ করা।
“আর পড়ুনঃ” কোন কোন তথ্যসমূহ সাধারণ খতিয়ান অন্তর্ভূক্ত থাকে?
৫. হিসাবের উদ্বৃত্ত নির্ণয় (Determining balance of account): একটি নির্দিষ্ট সময়ের শেষে প্রত্যেকটি হিসাবের উদ্বৃত্ত নির্ণয়ের উদ্দেশ্যে খতিয়ান তৈরি করা হয়। এর ফলে হিসাবসমূহের উদ্বৃত্ত জানা যায় ।
৬. গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই (Justify arithmetial accuracy): হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে খতিয়ান সংরক্ষণ করা হয়। খতিয়ান হিসাবসমূহের উদ্বৃত্ত নিয়ে রেওয়ামিল তৈরি করলে হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করা যায়।
খতিয়ানের উদ্দেশ্য কী?
৭. আর্থিক বিবরণী প্রণয়নের সাহায্য (Help in preparation of financial statements): আর্থিক বিবরণী প্রণয়নের উদ্দেশ্যেও খতিয়ান রাখা হয়। খতিয়ানের উদ্বৃত্ত নিয়ে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। ফলে ব্যবসায়ের আর্থিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা জানা যায়।
৮. ভুলত্রুটি ও জালিয়াতি রোধ (Prevention of errors and frauds): খতিয়ান তৈরির অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ভুলত্রুটি ও জালিয়াতি রোধ করা। খতিয়ানের বিভিন্ন হিসাবখাত তারিখ অনুসারে সংরক্ষণ করা হয়। ফলে এটি হিসাবের ভুলত্রুটি ও জালিয়াতি রোধে সহায়ক হয়।
৯. তুলনামূলক বিচার বিশ্লেষণ (Comparative analysis): বিভিন্ন বছরের তথ্যের তুলনার জন্যও খতিয়ান হিসাব রাখা হয়। খতিয়ানে প্রতি বছরের লেনদেনসমূহের পাকাপাকিভাবে হিসাব রাখা হয় বলে চলতি বছরের বিভিন্ন তথ্যের সাথে বিগত বছরের অনুরূপ তথ্যের তুলনামূলক বিচার বিশ্লেষণ করা যায়।
সুতরাং খতিয়ান উপরোক্ত বিভিন্ন উদ্দেশ্য সাধন করে বলে একটি প্রতিষ্ঠানে এর গুরুত্ব অপরিসীম।