কোন কোন তথ্যসমূহ সাধারণ খতিয়ান অন্তর্ভূক্ত থাকে? (What are the broad items does a general ledger contain ?)
অথবা, খতিয়ান হিসাব প্রস্তুত প্রণালী বর্ণনা করুন। (Describe the procedure of preparation of ledger.)
খতিয়ান হিসাবরক্ষণ প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর। অত্যন্ত সতর্ক ও যত্নসহকারে খতিয়ান হিসাব তৈরি করতে হয়।
খতিয়ান হিসাব প্রস্তুতের সময় যে সকল তথ্য উল্লেখ থাকে তা নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. ছক অংকন (Drawing the format): খতিয়ান হিসাব প্রস্তুতের সময় সর্বপ্রথম ছক অংকন করতে হয়। খতিয়ানের যে পৃষ্ঠায় হিসাব প্রস্তুত করা হয় ঐ পৃষ্ঠায় হিসাবের ছক অংকন করতে হয়।
প্রথমে ছককে দু’ভাগে ভাগ করা হয়।
এর পর প্রত্যেক ভাগে চারটি করে ঘর রাখা হয়। প্রত্যেক পার্শ্বের ঘরে তারিখ, বিবরণ, জাবেদা পৃষ্ঠা ও টাকার পরিমাণ লিখতে হবে। তবে চলমান জের ছকে ৬টি ঘর পাশাপাশি থাকে। এ ঘরগুলোতে যথাক্রমে তারিখ, হিসাবের নাম, জাবেদা পৃষ্ঠা, ডেবিট-ক্রেডিট ও উদ্বৃত্ত লিখতে হয়।
“আর পড়ুনঃ” খতিয়ান কাকে বলে? খতিয়ানের উপকারিতা বর্ণনা করুন।
২. হিসাবের নাম লেখা (Write name of account): খতিয়ান হিসাবের ছক অংকনের পর তার উপরিভাগে হিসাবের নাম লিখতে হয়। যেমন—দালান হিসাব, আসবাবপত্র হিসাব, বেতন হিসাব ইত্যাদি।
“আর পড়ুনঃ” মূলধন হিসাব ও চলতি হিসাব (Capital Account and Current Account)
৩. ডেবিট-ক্রেডিট লিপিবদ্ধকরণ: খতিয়ান হিসাবের ছকের বামদিকে ডেবিট এবং ডানদিকে ক্রেডিট লিখতে হবে।
৪. খতিয়ানভুক্তিকরণ (Ledger posting): জাবেদা হতে দাখিলা আলাদাভাবে খতিয়ানের সংশ্লিষ্ট হিসাবসমূহে স্থানান্তরিত করার কাজকে খতিয়ানভুক্তিকরণ বলে। খতিয়ানভুক্তির সময় হিসাবের ডেবিট ও ক্রেডিট দিকের তারিখের ঘরে লেনদেন সংঘটনের তারিখ লিখতে হবে। এরপর জাবেদা হতে লেনদেন খতিয়ানের সংশ্লিষ্ট হিসাবসমূহে লিখতে হয়।
জাবেদায় যে হিসাব ডেবিট খতিয়ানে উক্ত হিসাবের ডেবিট দিকে বিপরীত হিসাবের নাম লিখতে হবে।
আবার জাবেদায় যে হিসাবটি ক্রেডিট খতিয়ানে উক্ত হিসাবের ক্রেডিট দিকে বিপরীত হিসাবের নাম লিখতে হবে।
এরূপ লেনদেন লিপিবদ্ধ করবার সময় জাবেদার যে পৃষ্ঠা হতে লেনদেনটি খতিয়ানে স্থানান্তর করা হলো সে পৃষ্ঠা নম্বর খতিয়ানের পৃষ্ঠা নম্বর ঘরে লিখতে হবে। সংশ্লিষ্ট হিসাবখাতের টাকার অংক টাকার পরিমাণ ঘরে লিখতে হবে।
খতিয়ান হিসাব প্রস্তুত প্রণালী বর্ণনা করুন।
৫. সমষ্টিকরণ ও জের টানা (Casting and Balancing):একটি নির্দিষ্ট সময় পর বা হিসাবকালের শেষে সাধারণত ১ বছর পর খতিয়ানের প্রতিটি হিসাবের যে দিক বড় সেদিকের যোগফল অপরদিকে বসিয়ে উদ্বৃত্ত নির্ণয় করে হিসাবের সমতা বিধান করা হয়। যদি কোন হিসাবের ডেবিট বড় হয় এবং ক্রেডিট দিকে তার উদ্বৃত্ত বসানো হয় তাহলে তাকে ডেবিট উদ্বৃত্ত বলে।
পক্ষান্তরে কোন হিসাবের ক্রেডিট দিক বড় হলে ডেবিট দিকে উদ্বৃত্ত বসিয়ে সমান করা হলে তাকে ক্রেডিট উদ্বৃত্ত বলে।
এ উদ্বৃত্তগুলো সমাপনী জের বা উদ্বৃত্ত। পরবর্তী সময় এ উদ্বৃত্তই প্রারম্ভিক উদ্বৃত্ত বা জের হিসাবে সংশ্লিষ্ট হিসাবে স্থানান্তর করা হয়।