হিসাবরক্ষণের দু’তরফা ও একতরফা পদ্ধতি (Double Entry and Single Entry Bank-keeping)
নিচে একতরফা ও দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতির পার্থক্যসমূহ উপস্থাপন করা হলো:
বিষয় | দু তরফা দাখিলা পদ্ধতি | একতরফা দাখিলা পদ্ধতি |
১. সংজ্ঞা | যে পদ্ধতিতে প্রতিটি লেনদেনকে দু’বার লিপিবন্ধ করা হয় একবার একটি হিসাবের ডেবিট দিকে এবং আরেকবার অন্য একটি হিসাবের ক্রেডিট দিকে, তাকে দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি বলে। | যে পদ্ধতিতে দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতির নিয়ম নীতি পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ করা হয় না তাকে একতরফা দাখিলা পদ্ধতি বলে। |
২. আর্থিক অবস্থা নির্ধারণ | সম্পত্তি, দায় ও মালিকানা স্বত্ত্বের প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে কারবারের প্রকৃত আর্থিক অবস্থা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়। | সম্পত্তি ও দায় মালিকানা স্বত্ত্বের যথাযথ হিসাব না থাকায় কারবারের প্রকৃত আর্থিক অবস্থা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। |
৩. আর্থিক অবস্থা নির্ধারণ | উদ্বৃত্তপত্রের মাধ্যমে আর্থিক অবস্থা প্রদর্শন করা হয়। | বিষয় বিবরণীর মাধ্যমে আর্থিক অৱস্থা প্ৰদৰ্শন হয়। |
৪. নামিক হিসাব | এ পদ্ধতিতে ব্যক্তিবাচক, সম্পত্তিবাচক, নামিক হিসাবসহ সকল হিসাবই লিপিবদ্ধ করা হয়। | এ পদ্ধতিতে নামিক হিসাব লিপিবন্ধ করা হয় না। |
৫. প্রয়োগ ক্ষেত্র | ছোট-বড় নির্বিশেষে সকল প্রতিষ্ঠানে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়। | ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানে এ পদ্ধতির প্রয়োগ করা হয়। |
৬. লাভ-ক্ষতি নির্ণয়ের প্রক্রিয়া | আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে লাভ-ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়। | সমাপনী মূলধন থেকে প্রারম্ভিক মূলধন বাদ দিয়ে লাভ-ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়। |
৭. দ্বৈতসত্তা | এ পদ্ধতিতে প্রতিটি লেনদেনকে দ্বৈত সত্তায় বিশ্লেষণ করা হয়। | এ পদ্ধতিতে প্রতিটি লেনদেনকে দ্বৈত সত্তায় বিশ্লেষণ করা হয় না। |
৮. লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ পদ্ধতি | এ পদ্ধতিতে প্রতিটি লেনদেনকে প্রথমে জাবেদায় এবং পরবর্তীতে খতিয়ানের সংশ্লিষ্ট হিসাবে লিপিবদ্ধ করা হয়। | এ পদ্ধতিতে জাবেদা ও খতিয়ানে লেনদেন লিপিবদ্ধ করার ধারাবাহিকতা অনুসরণ করা হয় না। |
৯. গাণিতিক বিশুদ্ধতা | রেওয়ামিল তৈরি করার মাধ্যমে হিসাবের গাণিতিক বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা যায়। | এ পদ্ধতিতে রেওয়ামিল তৈরি করা সম্ভব নয় এবং হিসাবের গাণিতিক বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের ও কোন সুযোগ নেই। |
১০. গোপনীয়তা | এ পদ্ধতিতে হিসাব সংরক্ষণ করতে বহুসংখ্যক লোকের প্রয়োজন হয়। ফলে হিসাবের গোপনীয়তা রক্ষা করা সম্ভব হয় না। | অধিকাংশ ক্ষেত্রে কারবারের মালিক নিজেই হিসাব সংরক্ষণ করে। ফলে হিসাবের গোপনীয়তা রক্ষা করা সম্ভব হয়। |
১১. ভুল ও জালিয়াতি | হিসাব সংরক্ষণে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসারণ করায় ভুল ও জালিয়াতির সম্ভাবনা কম। | হিসাব সংরক্ষণে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায়। ভুল ও জালিয়াতির সম্ভাবনা বেশি। |
উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে এ কথা স্পষ্টভাবে বলা যায়-একতরফা দাখিলা পদ্ধতি কোন পূর্ণাঙ্গ ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি নয় বরং দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতিই একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি। ফলে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে এ পদ্ধতির বিকল্প হিসেবে অন্য কোন পদ্ধতি গ্রহণ করার কোন অবকাশ নেই।