প্রয়োজনে যে মরিতে প্রস্তুত, বাঁচিবার অধিকার শুধু তাহারই? উত্তরঃমানুষ আর মৃত্তিকার প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা প্রয়োজনে হাসিমুখে প্রাণ উৎসর্গ করার দৃঢতা ধারণ করে, বেঁচে থাকার অধিকার কেবল তাদেরই রয়েছে। মৃত্যু জীবনের অবশ্যসম্ভাবী পরিণত। মৃত্যুর ও শ্রেণীবিভাগ আছে। কারো মৃত্যু হয় স্বাভাবিকভাবেই, কারো কাপুরুষোচিত, কারো বিরোচিত। বীরোচিত মৃত্যুই মানুষকে অমরত্ব দান করে। জীবনকে সত্যিকারভাবে সফল ও উপভোগ্য করতে হলে মৃত্যুভয় পরিহার করতে হবে। কর্মময় মানবজীবনের প্রতিটি কাজেই কর্ম -বেশি ঝুঁকি আছে।যে কাজ যত দুরূহ যত বিপদজনক, সে কাজে মৃত্যুর ঝুঁকি তত বেশি।এমন ক্ষেত্রে দৃঢ়চিওে সাহসীরাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্ম সম্পাদনে এগিয়ে যায়।অদম্য সাহস ও দৃঢ়চিওের অধিকারী যারা,তারা দেশ ও জাতির যেকোনো প্রয়োজনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পদে পদে মৃত্যুর সম্ভাবনা মেনে নিয়েই তারা দুর্যোগের সময় জীবন বাজি রেখে দুর্যোগের মোকাবেলা করে। শত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে বাঁচাতে সাহসী লোকেরাই ঝাঁপিয়ে পড়ে যুদ্ধে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। এমন জীবনের অধিকারী যারা তারা মৃত্যুর মাধ্যমে অমরত্ব লাভ করে। সাহসী লোকেরা প্রতি মুহূর্তে জীবনকে, পৃথিবীর সৌন্দর্যকে উপভোগ করে। সমাজ ও সভ্যতা বিকাশের প্রতিটি ধারায় রয়েছে সাহসী মানুষের মহান অবদান। আর যারা ভীরু তারা বরাবর মৃত্যুকে এড়িয়ে যেতে চাই। কাপুরুষ চিও তাদের গৃহকোণে আবদ্ধ করে রাখে। জীবনের প্রয়োজনে জীবন বিলিয়ে দেওয়ার অপর আনন্দ থেকে তারা বঞ্চিত হয়। তাই তাদের বেঁচে থাকা হয়ে ওঠে অর্থহীন। প্রয়োজনে যে মরিতে দ্বিধা করে না, তাদের বেঁচে থাকাই সার্থক।বেঁচে থাকার অধিকার ও তাদেরই। মৃত্যুভয়ে ভীত না হয়ে যারা জীবন সংগ্রামের দৃপ্তপদক্ষেপে এগিয়ে যায় এবং মানব কল্যাণে জীবন বিসর্জন দিতেও দ্বিধা করেনা পৃথিবীতে তাদের বেঁচে থাকাটাই সার্থক।
প্রয়োজনে যে মরিতে প্রস্তু, বাঁচিবার অধিকার শুধু তাহারই?(ভাব সম্প্রসারণ)