গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন নহে বিদ্যা, নহে ধন, হলে প্রয়োজন?
উত্তরঃ মানবজীবনে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটাতে বিদ্যা ও ধন দুটোরই প্রয়োজন। এ দুটো অর্জনের জন্য মানুষকে অনেক পরিশ্রম, ত্যাগ ও সাধনা করতে হয়। আর এ অর্জনকে যদি যথাযথভাবে কাজে লাগানো না যায় তবে তা হয়ে পড়ে নিরর্থক। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন অর্থের প্রয়োজন তেমনি জীবনকে সার্থক ও সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য প্রয়োজন বিদ্যার। বিদ্যা মানুষের অজ্ঞনতা দূর করে তার মধ্যে নানা দক্ষতা ও ক্ষমতার জন্ম দেয়। কিন্তু মানুষ যদি তার অর্জিত বৃদ্ধাকে দেশ ও দশের কাজে না লাগায় তবে তা অর্জন সার্থক হয় না। মলাটবদ্ধ নির্জীব বিদ্যা আর কাজে না লাগেনো বিদ্যা দুই-ই অর্থহীন। মানুষই মলাটবদ্ধ নির্জীব বিদ্যাকে আত্মস্বার্থ করে তার মনোজগতের দ্বার উন্মোচন করে মনুষ্যত্ব ও বিবেকের বিকাশ ঘটায়। এর মাধ্যমে দেশের ও পৃথিবীর মানুষের মঙ্গল ও কল্যাণ সাধিত হয়। অর্থাৎ মলাটবদ্ব নিজীব বিদ্যার চেয়ে অর্জিত বিদ্যা অনেক বেশি শক্তিশালী ও মঙ্গলজনক। অর্জিত ধন-সম্পদ ও জীবন পরিচালনার জন্য অত্যন্ত জরুরি। কারণ অর্থ ছাড়া মানুষ চলতে পারে না জন্মগ্রহণ থেকে শুরু করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মানুষের অর্থের প্রয়োজন হয়। কিন্তু অর্জিত ধন যদি প্রয়োজনের সময় কাজে না লাগে তবে সেই ধন মূল্যহীন। ধন উপার্জন তখনই সার্থক হয় যখন তার নিজের প্রয়োজনে লাগানো যায়, অন্যের বিপদে সাহায্য করা যায় বা দেশের কল্যাণে ব্যয় করা যায়। ধনকে কৃপন মানুষের মতো আগলে রাখেলে শেষ পর্যন্ত তা হয়ে পড়ে কার্যকারিতাহীন। বিদ্যা ও অর্থ যখন জীবনকে সুন্দর ও সার্থক করার কাজে ব্যয় হয় তখনই তা সার্থক। বস্তুুত সেই বিদ্যা আর ধন সার্থক, যা নিজের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে ও দেশের কল্যাণে কাজে লাগানো যায়।