পথের প্রান্তে আমার তীর্থ নয় পথের দু ধারে আছে মোর দেবালয়।?
উত্তরঃ দেবতাকে পাওয়ার জন্য দূরের পথে না গিয়ে বরং জীবনের চারপাশে সন্ধান করলেই দেবতারা সন্ধান পাওয়া সম্ভব। কেননা তিনি জীবের চারপাশে পরিমণ্ডলেই অবস্থান করে থাকেন। দেবতাকে পাওয়ার আশায় অনেকেই অসীমের পানে ধ্যানমান হয়ে থাকে। সংসারের সকল মায়া-মমতা ছিন্ন করে তীর্থে তীর্থে ঘুরে বেড়ান দেবতার সন্তুষ্টির জন্য। তারা ভুলে যান সৃষ্টির মাঝে বাস করেন জগৎস্বামী।এ সহজ সত্য উপলধ্বি করতে না পেরে তারা মূলত জীবনের মূল্যবান সময়ই শুধু ব্যয় করেন। স্রষ্টার প্রিয় হলো মানুষ। তার করুণা, প্রেরণা, ভালোবাসা সবই মানুষকে কেন্দ্র করে। জগতের প্রতিটি মানুষের প্রতি তার প্রেম ও সহানুভূতি সমান। মানুষের তরেই তিনি অসীম ও প্রেমময়। সুতরাং স্রষ্টাকে পেতে হলে ভালবাসতে হবে মানুষকে। কালে কালে মহামানবেরা এ সত্য প্রচার করে গেছেন। তাদের সবকিছু দিয়ে তারা ভালোবেসেছেন মানুষকে, সেবা ও সংগ্রাম দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মানুষের অধিকার ও মর্যাদাকে। ইট-পাথরের দেবালয়ে কিংবা অসিমের পানে দেবতার সন্ধান না করে সৃষ্টির মাঝেই দেবতার অস্থিত উপলব্ধি চেষ্টা করা উচিত। নিরালোক নয়, দিবালোকেই তার অবস্থান। মানুষের কর্মে, সুখে-দুখে, হাসি-কান্নায় তিনি একাকার হয়ে আছে। সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা থাকলে অসহায় মানুষের মধ্যেই তাকে খুঁজে পাওয়া যায়। সুতরাং, মানুষকে ভালবাসলেই স্রষ্টাকে খুশি করা যায়। দেবতার পরমপ্রিয় সৃষ্টি মানুষ। মানুষের মধ্যেই দেবতা দেবতার বাস। তাই দেবতাকে পাওয়ার জন্য মানুষকে ভালবাসলেই যথেষ্ট, তার জন্য পথে পথে ঘুরে তীর্থের প্রয়োজন নেই।