পরের অনিষ্ট চিন্তা করে যেই জন নিজের অনিষ্টের বীজ করে সে বপন?
উত্তরঃ মানুষ হয়ে অপরের অমঙ্গল কামনার অর্থ হলো নিজের কল্যাণ ডেকে আনা। মানুষ একে অন্যের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে অপরের অনিষ্ট করার কথা চিন্তা করে। পরিণামে স্বার্থসিদ্ধির জন্য অন্যের ক্ষতি সাধন করে সেই বিপদের মুখোমুখি হয়। মানুষ হিসেবে কখনো তা কাম্য নয়। সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষ সমাজে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, সহানুভূতিও সুসম্পর্ক নিয়ে বসবাস করে। অন্যান্য জীবের সাথে মানুষের পার্থক্য পরিস্ফূট হয় তার উত্তম গুণাবলী দিয়ে। একজন মানুষ শুধু নিজের জন্য পৃথিবীতে বেঁচে থাকে না, তাকে তার চারপাশে মানুষ ও জগৎ নিয়েও ভাবতে হয়। যে মানুষ সর্বদা তার চারপাশের মানুষ, সমাজ ও জগৎ নিয়ে ভাববে সত্যিকার অর্থে দিনে অনেক মহৎ মানুষ। তিনি কখনো কারও অনিষ্ট চিন্তা করতে পারে না। এমনিকি যদি জীবন ও বিপদের মুখোমুখি হন তবুও। অন্যদিকে যে ব্যক্তি সর্বদা আপন স্বার্থসিদ্ধির জন্য অন্যের ক্ষতিসাধন করে, সে সর্বদাই এক প্রকার হীনমন্যতায় ভোগে। অন্যের অনিষ্ট করতে তার হৃদয় সামান্যতম ও কাঁপে না। এ ধরনের চিন্তা মানুষের মনুষত্বকে বিনষ্ট করে। পক্ষান্তরে, মান যদি অন্যের প্রতি মহৎ ও উদার হয় তবেই জীবন হয় আনন্দমুখর, সুন্দর ও প্রাণচাঞ্চল্য ভরপুর। শুধু ব্যক্তিজীবন নয় সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনেও অপরের অনিষ্ঠ সাধনের চেষ্টা ডেকে আনতে পারে ভয়ানক অকল্যাণ। সমাজ ও রাষ্ট্রে কল্যাণমুখী হয় দেশের প্রতিটি মানুষের পারস্পরিক সৌহার্দ্যের মাধ্যমে। কোন মানুষ যদি দেশ ও দশের বিপদের সময় সহমর্মিতা প্রকাশ না করে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য অনিষ্টের চিন্তা করে, সে মানুষরূপী অমানুষেরই নামান্তর। তারা ধারা দুই একজন মানুষ লাভবান হলেও সমগ্র দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ধরনের অনিষ্টকারিরা দেশের শত্রু। অন্যের অনিষ্ট চিন্তায় মগ্ন থাকতে থাকতে এরা শান্তি ও স্বস্তিময় জীবন ভুলে যায়। এভাবে নিজেরই অনিষ্ট করে চলে তারা। মানুষের উচিত নিজের নয়, অপরের মঙ্গল ও কল্যাণ করা, এতে যেমন সুখ ও শান্তিময় আনন্দ পাওয়া যায় তেমনি জীবনও সার্থক হয়।