পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি?( ভাব সম্প্রসারণ)

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি?

উত্তরঃ পরিশ্রম মানবসমাজের সৌভাগ্য উন্নতির শ্রেষ্ঠ উপায়। পৃথিবীর সব কাজেই পরিশ্রমসাপেক্ষ। যথোপযুক্ত শ্রমের ধারায় মানবজীবনের সৌভাগ্যের  সূচনা হয়। কাজেই ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনের সর্বএ পরিশ্রমই উন্নতির চাবিকাঠি। মানুষ সাধারণত বিশ্বাস করে, তার সুখ সমৃদ্ধি ও অনুভূতির ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। অনেক ভাগ্যকে দোষারোপ করে মনের দুঃখে হাল ছেড়ে দেয়। তারা মনে করে, ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে ছেঁড়া কাঁথা ও রাজার বিছানায় রূপান্তরিত হয়। কিন্তু এ ধারণার পেছনে অলসতা, অন্ধ ধর্মবিশ্বাস, কর্মবিমুখ মনোভাব ও ভাগ্যের উপর নির্ভরশীলতা কাজ করে।এ পৃথিবীতে কোন কিছুই বিনা পরিশ্রমে লাভ করা যায় না। সংসার জীবনে টিকে থাকতে হলে, জীবনকে সার্থক করতে হলে, দশের কল্যাণ করতে হলে মানুষকে নিরলস ভাবে পরিশ্রম করতে হবে। পরিশ্রমের মাধ্যমে বিদ্যা বুদ্ধি মান-সম্মান ধন-সম্পদ সব কিছু অর্জন করা যায়। যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী, সে জাতি তত বেশি উন্নত। পরিশ্রম ব্যক্তিকে দেয়  প্রতিষ্ঠা আর জাতিকে দেয়  আত্মমর্যাদা। পক্ষান্তরে, শ্রমবিমুখ ব্যক্তি বা জাতি কখনো স্বগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। পৃথিবীর যেসব মহান ব্যক্তি স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন  তারা সকলেই পরিশ্রম ও সাধণার দ্বরাই সাফল্য ও সৌভাগ্য লাভ করেছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, আইনস্টাইন, নিউটন, বিভিন্ন ধর্মের ধর্মপ্রবর্তক, রাজনীতিবিদ সকালেই  কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই স্ব- স্ব ক্ষেত্রে  প্রতিষ্ঠা লাভ করে সৌভাগ্যের অধিকারী হয়েছেন। যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী সে জাতি ততই দ্রুত গতিতে উন্নতির পথে এগিয়ে যায়। পৃথিবীর সকল উন্নত রাষ্ট্রের মূলে রয়েছে পরিশ্রমী  জাতির অবদান। অন্যদিকে,ব্যক্তি ও  ছাত্র জীবনে পরিশ্রম না করলে সৌভাগ্যের সূচনা হয় না, সাফল্য লাভ করা যায় না। মেধাবী  ছাত্র পরিশ্রম ও সাধনা না করলে কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করতে ব্যর্থ হবে। সৃষ্টিকর্তার সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষ তার বুদ্ধি, মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমেই পৃথিবীর অভূতপূর্ব পরিবর্তন সাধন করে চলেছে মানব কল্যাণের জন্য। আজকের সভ্যতা মানুষের যুগ যুগ ধরে পরিশ্রমের সম্নিলিত যোগফল। আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর বাসযোগ্য পৃথিবী তৈরি করতে আমাদের নিরলস পরিশ্রম করতে হবে। নিজের উন্নতির জন্য, সমগ্র পৃথিবীর মানবজাতির কল্যাণের জন্য আমাদের উচিত অলসতা  পরিহার করে, কর্মবিমুখ মনোভাব ত্যাগ করে যথাযথ পরিশ্রম করা। তবে প্রসন্ন হবে ভাগ্য।

 

About Post Author

Related posts