পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না, পরের জন্য হৃদয়-কুসুমকে প্রস্ফুটিত করিও? (ভাব-সম্প্রসারণ )

পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না, পরের জন্য হৃদয়- কুসুমকে প্রস্ফুটিত করিও?

উত্তরঃপরের উপকারে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়াতেই জীবনের সার্থকতা। নিজের স্বার্থকে বড় বলে বিবেচনা না করে অপরের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারলে জীবনের উদ্দেশ্য সফল হয়। এর মাধ্যমে জীবনের প্রকৃত অর্থ ও সুখ খুঁজে পাওয়া যায়। ফুল গাছে ফুটলোও চারদিকে সৌন্দর্য বিলেয়ে ঝরে  পড়ে। সে কখনো নিজের জন্য ফোটে না, অন্যকে আকৃষ্ট করতে, মুগ্ধ করতেই ফোটে। এতেই ফুলের সার্থকতা। মানবজাতির উচিত ফুলের এ কল্যাণকর ব্রতকে নিজের জীবনের পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করা। মানুষ যদি তার ক্ষণস্থায়ী জীবন ভোগবিলাস ও স্বার্থের কাজে ব্যয় করে তবে তাতে মানুষের সংকীর্ণতা ও স্বার্থপরতাই প্রকাশ পায়। নিজের সুখ বা স্বার্থ নয়, বরং পরের জন্য জীবনকে কাজে লাগাতে পারলে তাতে মানুষের মহও্বের প্রকাশ ঘটে। নিজের সুখের কথা বিসর্জন দিয়ে, অপরের কল্যাণের জন্য প্রয়োজনে জীবন ও মন উৎসর্গ করলে যে সুখ পাওয়া যায় তাই প্রকৃত সুখ। মানুষ যদি ফুলের মত মনোভাব নিয়ে কাজ করে তবে অবশ্যই সুখ খুঁজে পাবে। মহাজ্ঞানী, উদার ও মহৎ ব্যক্তিরা কখনো নিজ স্বার্থকে বড় করে দেখেন না। তাদের ধ্যানে ও কর্মের দেশ ও দশের ভাবনায় প্রধান। মহৎ মানুষ ফুলের মত তার সুন্দর গুণাবলী দিয়ে দেশ ও দশের কল্যাণে, পৃথিবীকে সুন্দর, নির্মল ও আনন্দমুখর করে গড়ে তুলতে প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালান। এ ধরনের স্বার্থত্যাগী মানুষের জন্য আজও পৃথিবী টিকে আছে। ধর্মেরপ্রবর্তকরা নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন মানুষকে সৎ সুন্দর ও সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য। তারা মনে করেন, তাদের আগমনই ঘটেছে মানুষের কল্যাণের জন্য। পুষ্প যেমন অপরের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করে, তেমনি জ্ঞানী, উদার ও মহৎ  ব্যক্তিরা অপরের কল্যাণ সাধনের ব্রতী নিরলস করেন। আমাদের সকলেরই উচিত দেশ ও জাতির কথা চিন্তা করে ফুলের মত নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা।

Table of Contents

About Post Author

Related posts