রাত যত গভীর হয় প্রভাত তত নিকটে আসে?( ভাব সম্প্রসারণ)

রাত যত গভীর হয় প্রভাত তত নিকটে আসে?

উত্তরঃ সুখ দুঃখ, হাসি কান্না, আনন্দ বেদনা সবকিছু নিয়েই মানবজীবন। মানবজীবনের দুঃখ যেমন আছে তেমনি দুঃখের কালো মেঘ ভেদ করে একসময় দেখা দেয় সুখের সূর্য। কাজেই দুঃখ দৈন্যে হতাশ না হয়ে, ধৈর্যের সাথে সাধনা করতে হবে সুখ-সমৃদ্ধির জন্য। পৃথিবীতে মানুষ নিরন্তর সংগ্রাম করে চলছে কখনো দুঃখকে অতিক্রম করার জন্য, আবার কখনও সুখের সন্ধানে। আমরা জানি সুখ দুঃখ পালাক্রমে আসে মানুষের জীবনে। একটানা দুঃখ যেমন মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে,তেমনি একটানা সুখ একঘেয়ে ও বৈচিত্রহীন। এ দুটো বিষয় আছে বলেই মানুষ জীবনকে উপভোগ করতে পারছে। যেমনঃ রাতের পর দিন, আলোর পর অন্ধকার। রাতের ভয়-ভীতি দিনের আলোয় দূর হয়, অন্ধকারের পরে আলো মনের প্রফুল্লতা সৃষ্টি করে। কাজে গতি আসে। কোন অন্ধকারই চিরস্থায়ী নয়, সামরিক। তেমনি দুঃখও  চিরস্থায়ী নয়। দুঃখ যন্ত্রণায় যে সুখ পাওয়া যায় সেটা খাঁটি সুখ অর্থাৎ প্রকৃত সুখ। রাতের আধার শেষে একসময় প্রভাতের আলো দেখা দেয় এটি  যেমন সত্য তেমনি জীবনের দুঃখকে দেখে হতাশ হওয়া উচিত নয়। প্রভাতের মত একসময় সুখ এসে  সেখানে উকি দেবে। এদের একটির অবস্থান অপরটি বিপরীতে। দুঃখের ভয় আছে বলেই মানুষ তাঁকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। সাধনা করে সুখের সোনালী প্রভাতের। দুঃখের  উপস্থিতিই মানুষকে সুখের মূল্য বুঝায়। তবুও  অবুঝ মানুষ চিরসুখের অযৌক্তিক কামনা নিয়ে ভাবে সুখ বুঝি তার দুয়ারে এলো না। মানুষ ভুলে যায় যে, পতঙ্গ আনন্দ বিহারে যতই উদ্দগগনে উঠতে থাকবে, তার পতনের মুহূর্তও নিকটবর্তী হয়। দিন আবির্ভূত হয় রাতকে ঘিরে, রাত দিনটি ঘিরে। তাই রাত যত গভীর হয় ততই প্রভাদ এগিয়ে আসে। সুখ-দুঃখ তেমনি এক রহস্য। জীবনে দুঃখ যন্ত্রণা দেখে কাপুরুষের মত মুষড়ে পড়া মোটেই কাম্য নয়। প্রকৃতির নিয়মে রাত দিনের আলোকে গ্যাস করে চিরস্থায়ী হতে পারে না। তেমনি সুখ ও দুঃখ কখনোই চিরস্থায়ী নয়।

Table of Contents

About Post Author

Related posts