বাংলাদেশি কোম্পানিসমূহের আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আলোচনা করুন। (Discuss the problems encountered in analysing the Financial Statements of Bangladeshi companies.)
একটি কারবারি প্রতিষ্ঠান আর্থিক বছরের শেষে কারবারের লাভ-লোকসান এবং আর্থিক অবস্থা প্রকাশের জন্য যে সমস্ত বিবরণী প্রস্তুত করে তাকে কারবারের আর্থিক বিবরণী বলে।
আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণের জন্য আর্থিক বিবরণী তথা লাভ-লোকসান হিসাব ও স্থিতিপত্রের মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা ও এদের উপস্থাপন পদ্ধতি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশি কোম্পানিসমূহ বাংলাদেশে গৃহীত হিসাব মানসমূহ সঠিকভাবে অনুসরণ করে হিসাব প্রস্তুত করে না বিধায় তাদের প্রকাশিত তথ্যের তুলনাযোগ্যতা ও নির্ভরযোগ্যতা উভয়ই কম।
তাছাড়া নিম্নলিখিত সমস্যারও সম্মুখীন হতে হয় :
১. বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোতে Horizontal Form এ স্থিতিপত্র তৈরি করার ফলে চলতি সম্পদ, চলতি দায়, স্থায়ী সম্পত্তি ও চলতি মূলধন সুনির্দিষ্টভাবে উপস্থাপিত হয় না।
ফলে আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
“আর পড়ুনঃ” আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা, উপযোগিতা ও ব্যবহার ব্যাখ্যা করুন
২. বাংলাদেশে গৃহীত হিসাবমানগুলোর যথাযথভাবে প্রয়োগ না করার ফলে আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণের সমস্যা দেখা দেয়।
“আর পড়ুনঃ” আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণের বিভিন্ন পদ্ধতি আলোচনা কর।
৩. বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোকে বর্তমানে গতানুগতিক আর্থিক বিবরণীর সাথে নগদ প্রবাহ বিবরণী প্রস্তুত করতে হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাব দেখা দেয়।
৪. মূল্যস্তর পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের কোম্পানিসমূহের অর্থব্যবস্থার দ্রুত পরিবর্তন সাধিত হয়।
বিভিন্ন সম্পত্তি বিভিন্ন দামে সংগ্রহ করা হয়।
ফলে আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণের সমস্যা দেখা দেয়।
“আর পড়ুনঃ” আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করুন।
৫. বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোকে সাধারণত এক বছরের জন্য আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণ করতে হয়।
যা ব্যবহারের দিক থেকে এবং মূল্যের দিক থেকে খুবই সীমাবদ্ধ।
এ ধরনের বিশ্লেষণের উপর পুরাপুরি নির্ভর করা যায় না।
কয়েক বছরের পরিব্যাপ্তি করতে পারলে অর্থবহ তুলনা করা সম্ভব হবে
বাংলাদেশি কোম্পানিসমূহের আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণে কি কি সমস্যার সম্মুখীন
উপরোক্ত সমস্যাগুলোর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের উন্নয়নের কারণে এবং সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশনের চাহিদা মোতাবেক প্রকাশিত আর্থিক বিবরণীসমূহে তুলনামূলক তথ্যের সমাহার, অনুপাত বিশ্লেষণ ও নগদ প্রবাহ বিবরণী প্রকাশ করা হয়। তাছাড়া ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের বিধান অনুসারে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোতে উল্লম্বভাবে (Vertical) স্থিতিপত্র তৈরি করা হয়। ফলে বিভিন্ন তথ্য, যেমন— চলতি সম্পত্তি, চলতি দায়, স্থায়ী সম্পত্তি ইত্যাদি সুবিন্যস্তভাবে উপস্থাপন করা হয়।