নগদ প্রবাহ বিবরণীর সীমাবদ্ধতা কী কী? (What are the limitations of cash flow statement?)
প্রত্যক্ষভাবে যে সব লেনদেন নগদ অর্থের পরিমাণের পরিবর্তন ঘটায় তার সংক্ষিপ্ত রূপই নগদ প্রবাহ বিবরণীতে প্রকাশ পায়। আর্থিক ক্ষেত্রে বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এটা ব্যবস্থাপনাকে সহায়তা করলেও এর বেশ কিছু অসুবিধা বা সীমাবদ্ধতা থেকেই যায়।
নিম্নে এই বিবরণীর কতিপয় অসুবিধা আলোচনা করা হলো:
১. নগদ প্রবাহ বিবরণীতে নগদ অর্থের যে আগমন ও নির্গমন প্রকাশিত হয় তা বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটা সম্পদের অ-নগদ ব্যবহার সম্পর্কিত পরিবর্তন তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়।
২. এই বিবরণীর মাধ্যমে আমরা কোন প্রতিষ্ঠানের স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধের যে সামর্থ্য যাচাই করি, তা পুরোপুরি সঠিক নাও হতে পারে। কারণ এখানে সহজে বা অল্প সময়ে রূপান্তরযোগ্য সম্পদ বিবেচনায় আনা হয় না।
৩. নগদ প্রবাহ বিবরণী কোন প্রতিষ্ঠানের স্বল্পমেয়াদি আর্থিক অবস্থা বিশ্লেষণ করলেও দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক বিশ্লেষণে তেমন সহায়ক হয় না।
৪. এই বিবরণী থেকে চলতি মূলধন ও আর্থিক সম্পদের তথ্য সরাসরি ও সম্পূর্ণরূপে পাওয়া যায় না, যা একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
৫. নগদ প্রবাহ বিবরণীতে নগদ প্রবাহকে সাধারণত IAS-7 অনুযায়ী তিনটি কার্যক্রমে বিভক্ত করে বিশ্লেষণ করা হয়।
কিন্তু এই শ্রেণীবিন্যাসকরণ বেশ ঝামেলাপূর্ণ ও সময়সাপেক্ষ।
৬. এই বিবরণীর মাধ্যমে আমরা জানতে পারি না একটি প্রতিষ্ঠান স্থায়ী সম্পত্তি ও দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক খাতে কি পরিমাণ নগদ অর্থ বিনিয়োগ করতে পারবে।
৭. নগদ তহবিল চলতি মূলধনের অংশ এবং নগদ তহবিলের উন্নতি ঘটলে তহবিলেরও উন্নতি ঘটে।
কিন্তু এটা উল্টোভাবে সত্য নয়।
৮. “নগদ” শব্দটি আমরা অহরহ ব্যবহার করলেও এর ব্যাখ্যা করা বা নিখুঁত সংজ্ঞা দেওয়া বেশ কঠিন।
ব্যাপক অর্থে চেক, স্ট্যাম্প, পোস্টাল অর্ডার, সঞ্চয়পত্র ইত্যাদি বিনিময়পত্রগুলোকে নগদ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও এ বিষয়ে অনেক সময় যথেষ্ট মতপার্থক্য দেখা দেয়।
উপরোক্ত অসুবিধা বা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে নগদ প্রবাহ বিবরণী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।