একঘরা নগদান বই বলতে কী বুঝেন? একঘরা নগদান বইয়ের প্রস্তুত প্রণালী বর্ণনা করুন। (What do you mean by single column cash book? Discuss the preparation of single column cash book.)
একঘরা নগদান বই: যে নগদান বইয়ের উভয়দিকে শুধুমাত্র একটি ঘরে টাকার ঘর থাকে তাকে একঘরা নগদান বই বলে।
ডেবিট দিকে প্রাপ্তিসমূহ ও ক্রেডিট দিকে পরিশোধসমূহ লিপিবদ্ধ করা হয়।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে একঘরা নগদান বই বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে যা নিচে আলোচনা করা হলো:
১. নগদ টাকার ঘরযুক্ত একঘরা নগদান বই: যখন শুধুমাত্র নগদ টাকার লেনদেন লিপিবদ্ধ করা হয় তখন এ ধরনের নগদান বই সংরক্ষণ করা হয়।
২. ব্যাংক টাকার ঘরযুক্ত একঘরা নগদান বই: নগদ টাকা এবং প্রাপ্ত চেক ব্যাংকে জমার মাধ্যমে এবং সমস্ত খরচ চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হলে এ ধরনের নগদান বই সংরক্ষণ করা হয়।
৩. মিশ্র নগদান বই: যখন নগদ টাকা ও ব্যাংক টাকা নগদান বইয়ের একই ঘরে মিশ্র অবস্থায় সংরক্ষণ করা হয় তখন এ ধরনের মিশ্র নগদান বই সংরক্ষণ করা হয়।
একঘরা নগদান বইয়ের প্রস্তুত প্রণালী বর্ণনা
একঘরা নগদান বইয়ের প্রস্তুত প্রণালী: একঘরা নগদান বইয়ের প্রস্তুত প্রণালী নিচে আলোচনা করা হলো :
১. প্রারম্ভিক উদ্বৃত্ত: প্রথমে নগদ টাকার প্রারম্ভিক উদ্বৃত্ত একঘরা নগদান বইয়ের ডেবিট দিকে বিবরণের ঘরে ব্যালেন্স বি/ডি নামে এবং টাকার ঘরে টাকা লেখা হয়।
২. তারিখ: তারিখের ক্রমানুসারে নগদ লেনদেনসমূহ লিপিবদ্ধ করা হয়।
৩. নগদ প্রাপ্তি ও পরিশোধ: নগদ প্রাপ্তিসমূহ ডেবিট দিকে ও নগদ পরিশোধসমূহ ক্রেডিট দিকে লেখা হয়।
৪. চেক প্রাপ্তি ও ব্যাংক জমা: প্রাপ্ত চেক নগদ প্রাপ্তি হিসেবে গণ্য করে ডেবিট পাশে লেখা হয় এবং চেকটি পরে ব্যাংকে জমা দিলে ক্রেডিট পাশে লেখা হয়।
৫. রসিদ ও ভাউচার নম্বর: নগদান বইয়ের ডেবিট দিকে রসিদ নম্বর এবং ক্রেডিট দিকে ভাউচার নম্বর লিখতে হয়।
৬. বাট্টা: নগদ প্রাপ্তির সময় ‘প্রদত্ত বাট্টা’ এবং নগদ প্রদানের সময় ‘প্রাপ্ত বাট্টা’ সৃষ্টি হয়।
একঘরা নগদান বইয়ে প্রাপ্ত টাকা ডেবিট দিকে বসিয়ে প্রদত্ত বাট্টা ক্রেডিট আর প্রদত্ত টাকা ক্রেডিট দিকে বসিয়ে প্রাপ্ত বাট্টা ডেবিট দিকে লিপিবদ্ধ করা হয়।
৭. অন্যান্য তথ্যাদি: নগদান বইয়ের অন্যান্য তথ্যাদি যেমন: বিবরণ, টাকার ঘর যথাযথভাবে পূরণ করা হয়।
রসিদ নম্বর ও ভাউচার নম্বর প্রশ্নে থাকে না বিধায় কিছু লেখার প্রয়োজন পড়ে না।
রসিদ নম্বর ও ভাউচার নম্বর দেয়া থাকলে লিখতে হবে।
৮. উদ্বৃত্তকরণ: সমস্ত নগদ লেনদেনগুলো এন্ট্রি দেয়ার পর উভয়দিকের যোগফল নির্ণয় করে উদ্বৃত্তকরণ করা হয়।
উভয়দিকের পার্থক্য যে দিকে কম সে দিকে বসিয়ে “ব্যালেন্স সি/ডি” লিখতে হয়। নির্ণীত ডেবিট উদ্বৃত্ত ঐ সময় শেষে হাতে নগদ উদ্বৃত্ত বা নগদ তহবিলের পরিমাণ নির্দেশ করে, পরবর্তীতে আর্থিক সময়ের প্রারম্ভে ব্যালেন্স বি/ডি লিখে নগদান বইয়ের সমাপ্তি টানা হয়।