অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সমদহে?(ভাব সম্প্রসারণ)

অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সমদহে?

উত্তরঃ অন্যায়কারী ও অন্যায়কে প্রশ্রয় দানকারী ন্যায়ের  বিচারে  উভয়েই  সমান  অপরাধী। এ  জন্য উভয়ের  উচিত অন্যায়কে  প্রতিহত  করা। ক্ষমা  মানুষের  একটি  মহৎ  গুণ  হলেও অনেক  সময় অপরাধী  ক্ষমা  পেলে  তার  অপরাধপ্রবণতা  লোপ না  পেয়ে  বৃদ্ধি  পায়। বেশির  ভাগ  ক্ষেএেই  ক্ষমা অপরাধ  বৃদ্ধিতে  সহায়তা  করে,  সামান্য  অপরাধ ক্ষমা  পেয়ে  এক  সময়  মহা  অপরাধে  রূপ  নেয়। সমাজের ন্যায়পরায়ন ব্যক্তি যেমন আছেন তেমনই আছে  অন্যায়কারী।  আর তার পাশাপাশি অবস্থান করছে অন্যায় সহকারি।  সব কিছু জেনেশুনে অন্যায়কারীকে যিনি বাধা দেন না, প্রকারান্তরে অন্যায়কারীকে প্রশ্রয় দেন, পরোক্ষভাবে তিনি দেশ ও সমাজের ক্ষতি সাধন করেন। এ ধরনের ব্যক্তিরা অন্যায় সহ্য করার জন্য অপরাধী বলে গণ্য হতে পারেন। বস্তুত মানুষ শুধু করুনাবশতই অন্যায়কারীকে ক্ষমা করেন না, তার এ ক্ষমার নেপথ্যে রয়েছে এক ধরনের পলায়নবৃত্তির মনোভাব।  নিজেকে অপরাধী সংসব  থেকে দূরে সরিয়ে রাখাকেই  তিনি নিরাপদ বলে মনে করেন। এভাবেই  সমাজে  অপরাধপ্রবণতা প্রবল হয়ে ওঠে। কিন্তু আমরা জানি, অন্যায়কারী যত ক্ষমতাবান হোক না কেন তাদের মনোবল থাকে দুর্বল, ভীরু কাপুরুষের মতো। সমাজে অন্যায়কারীরা ঘৃনিত হলে ও অন্যায়  সহকারি  বা ক্ষমাকারী ঘৃণিত বলে বিবেচিত হয় না। সত্যিকার অর্থে অন্যায়কারীর মত সহকারীও অপরাধে অপরাধী ও দোষী। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে বা প্রতিবাদহীন হলে অপরাধী দিন দিন অতি সাহসী ও  অপ্রতিরোধ্য হয়ে দাঁড়ায়। সে সর্বক্ষেত্রেই  তখন  প্রভাব বিস্তার করবে। বিবেকবান মানুষকে এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। তা না হলে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য বিবেকের কাছে, সমাজ, দেশ ও জাতি এমনিকি  সৃষ্টিকর্তার কাছে ও দায়ী থাকতে হবে ।

Table of Contents

About Post Author

Related posts