স্বদেশের উপকারে নাই যার মন কে বলে মানুষ তারে, পশু সেই জন?(ভাব সম্প্রসারণ)

স্বদেশের উপকারে নাই যার মন কে বলে মানুষ তারে,পশু সেই জন?

উত্তরঃ একজন মানুষ জন্মের পর থেকে স্বদেশের মাটি, বাতাস ও পানি নিয়ে বেচে থাকে। আর যাদের স্বদেশের প্রতি ভালোবাসার নেই, মমত্ব নেই, দেশ ও জাতির মহাবিপর্যয় যাদের হৃদয় কাঁদে না, তারা অকৃতজ্ঞ ও পশুর সমান। স্বদেশপ্রেম মানব চরিত্রের এক অপরিহার্য অঙ্গ। যে ব্যক্তি স্বদেশের প্রতি অবজ্ঞা পোষণ করে সে কখনো দেশের উপযুক্ত নাগরিক হতে পারে না। কারণ যে স্বদেশ তাকে মায়ের মত করে গভীর ভালোবাসায় বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা বোধ নেই। দেশের প্রয়োজনে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে সদা প্রস্তুত থাকা উচিত। স্বদেশ প্রেমবিহীন মানুষ প্রকৃতপক্ষে মনুষত্ব বিবর্জিত পশু বলে পরিচিত হয়। যে ব্যাক্তি মন স্বদেশপ্রেমহীন  সে ক্ষতিসাধনেও পিছপা হয় না। বস্তুত মায়ের কাছে সন্তান যেমন  চিরঋণী ঠিক তেমনি স্বদেশের কাছে ও আমরা চিরঋণী। দেশপ্রমিক মানুষ কখনো দেশের অমঙ্গল, অকল্যাণ, ধ্বংস ও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না বরং জীবন উৎসর্গ করে দেশের হিত সাধন করে। সে কারণেই ১৯৭১ সালে স্বদেশপ্রেমী নাগরিকরা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে কুণ্ঠিত হননি। নিজের জীবন অপেক্ষা দেশের মর্যাদা তাদের কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে দেশদ্রোহী মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীরা পশুর মত আচরণ করেছে। হত্যা ও নির্যাতনের দোসর হয়েছে। উত্তম চরিত্র ও মনুষ্যত্বের বলিয়ান হয়ে উঠতে চাইলে প্রত্যেককে দেশকে ভালোবেসে এর উপকার সাধনে আত্মনিয়োগ করতে হবে। এজন্যই মহাজ্ঞানী বলে গেছেন, জননী, জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী।যারা আত্মকেন্দ্রিক দেশের হিত সাধন করে না, দেশের কল্যাণ কামনা করে না তারা মানুষ নামে কলঙ্ক। পশুর যেমন কোন বিবেক, মনুষত্ব ও উপলব্ধি করার ক্ষমতা নেই এরাও তেমন। এ ধরনের মানুষ আর পশুতে কোন পার্থক্য নেই।

Table of Contents

About Post Author

Related posts