অনুপাত বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যসমূহ আলোচনা করুন। (Discuss objectives of ratio analysis.)
অথবা, অনুপাত বিশ্লেষণ থেকে কী ধরনের তথ্য পাওয়া যায়?
আর্থিক বিশ্লেষণের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বহুল ব্যবহৃত ও ফলপ্রসূ বিশ্লেষণ হলো অনুপাত বিশ্লেষণ।
আর্থিক বিশ্লেষকগণ প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা, ব্যয় সংকোচন ও মুনাফার হারের বৃদ্ধির ধারা ঠিক রাখা, ইত্যাদি মূল্যায়নের জন্য অনুপাত বিশ্লেষণের সহায়তা নিয়ে থাকে।
নিচে এর উদ্দেশ্যসমূহ বর্ণনা করা হলো :
“আর পড়ুনঃ” অনুপাত বিশ্লেষণ কী?
১. তারল্য (Liquidity) : কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য তারল্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রয়োজনীয় কার্যকরি মূলধন আছে কিনা আবার স্বল্পমেয়াদি দায় পরিশোধ করার জন্য নগদ অর্থ আছে কিন্তু তা সংরক্ষণ করা জরুরি।
এ তারল্য অবস্থা বিশ্লেষণের জন্য Current Ratio এবং Acid Test Ratio বিশ্লেষণ সর্বাধিক জনপ্রিয়।
“আর পড়ুনঃ” সমান্তরাল ও উল্লম্ব বিশ্লেষণের মধ্যে পার্থক্য দেখান
২. সামর্থ্য (Solvency): অনুপাত বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদে ঋণ পরিশোধ করার সামর্থ্য রাখে কিনা তা যাচাই করা যায়।
এর উপর ব্যবস্থাপনা তাদের ঋণ গ্রহণ বা না গ্রহণ এবং বিনিয়োগকারীগণ বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
৩. ব্যবস্থাপনার দক্ষতা (Management Efficiency): ব্যবস্থাপনা কত দক্ষতার সাথে ব্যবসায় পরিচালনা করছে অর্থাৎ ব্যবসায়ের সম্পদ কত কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারছে তা জানা সম্ভব হয় অনুপাত বিশ্লেষণের মাধ্যমে।
বিশেষ করে Turn over ratio, expenses ratio ও activity ratio দ্বারা সহজেই প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা পরিমাপ বা মূল্যায়ন করা যায়।
“আর পড়ুনঃ” আর্থিক বিবরণীর বিশ্লেষণের প্রক্রিয়াগুলো আলোচনা করুন।
অনুপাত বিশ্লেষণ থেকে কী ধরনের তথ্য পাওয়া যায়?
8. মুনাফা অর্জন (Profitability): ব্যবসার মুনাফা দ্বারা বুঝা যায় এর স্বাস্থ্য ভাল না মন্দ। এটা পরিমাপ করার জন্য Gross Profit Ratio, Net Profit Ratio, Return on Investment এবং Return on Equity অনুপাত ব্যবহৃত হয়।
আর মুনাফা অনুপাতের উপর ভিত্তি করে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীগণ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হয়।
৫. আন্তঃফার্ম মূল্যায়ন (Inter-firm evaluation): একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ফলাফলের সাথে একই শিল্পের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ফলাফল তুলনা করে বুঝা যায় নিজস্ব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কত ভাল করছে আর এরূপ তুলনা করতে হলে অনুপাত বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
৬. সাধারণ প্রবণতা বিশ্লেষণ (Common trend analysis): সাধারণ প্রবণতা বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি আর্থিক বিবরণীর পরিবর্তনগুলো জানা সম্ভব হয়।
অর্থাৎ ব্যবসার ঝোঁক উন্নতির দিকে না অবনতির দিকে।
আর প্রতিষ্ঠানের গতিপ্রকৃতি বা সাধারণ প্রবণতা (Trend) নির্ণয়ে অনুপাত বিশ্লেষণ সাহায্য করে থাকে।
উপরোক্ত আলোচনা হতে বুঝা আয় যে, একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুপাত বিশ্লেষণ কতটা গুরুত্বপুর্ণ।
আর এর মাধ্যমে ব্যবস্থাপকগণ কার্যকরি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সমর্থ হয় এবং বিভিন্ন বহিঃস্থ পক্ষ তাদের প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অনুপাত বিশ্লেষণের সহায়তা নিয়ে থাকে।