আলো বলে, ‘অন্ধকার, তুই বড় কালো অন্ধকার বলে, ‘ভাই, তাই তুমি আলো। ভাবসম্প্রসারণ আলো বলে for class 10
ভাব-সম্প্রসারণ: মানবকল্যাণেই সৃষ্টিকর্তা আলো ও অন্ধকার সৃষ্টি করেছেন।
অন্ধকার ব্যতীত আলোর গৌরব ম্লান হয়ে যায়। আলো এবং অন্ধকার পরস্পর বিপরীতধর্মী হলেও একে অপরের পরিপূরক।
মানবজীবনের সর্বত্রই আলো-আঁধাররূপ সুখ-দুঃখের সমাবেশ দেখা যায়। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির অস্তিত্ব নিরর্থক।
“আর পড়ুনঃ” শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির।
আমাদের এ সুন্দর পৃথিবীতে পরস্পর বিপরীতধর্মী উপাদানসমূহের দ্বান্দ্বিক প্রক্রিয়া সচল, অস্তিত্বমান।
ভালো-মন্দ, সৃষ্টি-ধ্বংস, জন্ম-মৃত্যু, আলো-আঁধার, সুখ-দুঃখ এ সমস্তই পরস্পর বিপরীতধর্মী হলেও এরা একে অপরের পরিপূরক।
নিরবচ্ছিন্ন সমস্ত কিছুর অস্তিত্বই মূল্যহীন। জন্মের পর মৃত্যু অবধারিত বলেই জীবন যেন অমূল্য রত্ন। পৃথিবীতে মৃত্যুর উপস্থিতি না থাকলে জীবন হতো মূল্যহীন। ধ্বংসের ভয় আছে বলেই মানুষ সৃষ্টিকে সংরক্ষণ করে, ভালোবাসে। পৃথিবীতে সুখের অস্তিত্ব আছে বলেই মানুষ দুঃখকে হাসিমুখে বরণ করে। আর দুঃখের অস্তিত্ব আছে বলেই সুখের বৃত্তে বসবাস করার অনন্ত প্রচেষ্টা মানুষের। এ জগতে আলো ও অন্ধকার উভয়েরই অস্তিত্ব দেখতে পাওয়া যায়। আলো অন্ধকারকে হেয় করার জন্যে বলে যে, অন্ধকার থাকায় এ পৃথিবী এতটা নিরানন্দময়। অন্ধকার একথার জবাবে বলে, সে আছে বলেই আলোর অস্তিত্ব এতটা গৌরবদীপ্ত। অন্ধকার না থাকলে আলোর গৌরব অনিবার্যভাবে ম্লান হয়ে যেত। যদি পৃথিবীতে কখনো সূর্য অস্ত না যেত, অহোরাত্র সূর্যালোকে চারদিক গ্লাবিত হতো, তাহলে তার কোনো মূল্য থাকত না। অন্ধকার এসে দিবালোককে আচ্ছন্ন করে বলেই দিনের আলো এতো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অতএব মানবজীবনে আলো এবং অন্ধকার উভয়েরই প্রয়োজন আছে।
“আর পড়ুনঃ” মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে হারা শশীর হারা হাসি অন্ধকারেই ফিরে আসে।
পৃথিবীতে আলো ও অন্ধকার এ দুই বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের একটাকে বাদ দিয়ে অন্যটার অস্তিত্ব কল্পনাতীত। পরস্পরবিরোধী বৈশিষ্ট্যের অস্তিত্বের কারণেই প্রকৃতি হয়েছে বৈচিত্র্যপূর্ণ, সুষম।